মার্কিন ডলারের দাম নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালুর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ঠিক কীভাবে এই পদ্ধতি কাজ করবে, তা এখনো ঠিক করতে পারেনি আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তবে আগামী মার্চের মধ্যে এই পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই পদ্ধতি চালু করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শরণাপন্ন হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য আইএমএফের একটি কারিগরি দল দেশে আসবে, এরপর তাদের পরামর্শে ঠিক হবে পদ্ধতিটি চালুর পথনকশা।
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা দেওয়ার সময় বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর আগে ডলারের দাম নির্ধারণে সাময়িক ভিত্তিতে ‘ক্রলিং পেগ’ চালু করা হবে। বলা হয়, এই পদ্ধতিতে একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ডলারের দাম ওঠানামা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে আইএমএফের সঙ্গে অনলাইনে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা আলোচনা করেছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইছে ডলারের দাম ১১০ থেকে ১১২ টাকার মধ্যে রাখতে এবং সে ব্যাপারেই আলোচনা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে এই সীমার পরিবর্তন কীভাবে হতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে শুধু জোগান-চাহিদার ওপর ডলারের দাম ওঠানামা করত। ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের দাম নির্দিষ্ট একটি সীমার মধ্যে ওঠানামা করবে। নতুন পদ্ধতিতে অর্থনীতির মৌলিক অবস্থা বিবেচনা করে ডলারের দাম একটা সীমার মধ্যে বাড়বে বা কমবে। ফলে ডলারের দাম একবারে খুব বেশি বাড়তে পারবে না, আবার কমতেও পারবে না।
জানা গেছে, ভিয়েতনাম, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে, কোস্টারিকাসহ কিছু দেশ এই পদ্ধতি ব্যবহার করছে।
দেশে দেড় বছর ধরে ডলার-সংকট চলছে। এই সংকটের কারণে ডলারের আনুষ্ঠানিক দাম ৮৬ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছে। তবে বাজারে লেনদেন হচ্ছে ১২০ টাকার বেশি দামে। এর প্রভাবে চলতি হিসাবের পাশাপাশি আর্থিক হিসাবও এখন ঘাটতিতে রয়েছে।
গত ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। কিন্তু এর পর থেকে রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, সেই সময়ে তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অর্ধেকের বেশি কমেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি অনুযায়ী, এখন রিজার্ভ ২ হাজার ৩ কোটি ডলার। তবে প্রকৃত বা নিট রিজার্ভ ১৭ বিলিয়ন ডলারের কম। ডলার-সংকটে চাহিদামতো পণ্য আমদানি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। আবার বিদেশি কোম্পানিগুলো মুনাফাও নিজ দেশে নিতে পারছে না।
Related Posts
Bangladesh’s Economic Resilience: A Statistical Snapshot (2024)
Bangladesh’s Economic Ascent: A Journey from 1971 to 2024
Top Foreign Companies Investing in Bangladesh