প্রশ্নঃ লক্ষ্যাণুরণন বিষয়টি আমি ভালোভাবে বুঝতে পারি নি, দয়া করে বুঝিয়ে বলবেন কি?
উত্তরঃ লক্ষ্যানুরণন হচ্ছে—আপনার লক্ষ্য অর্জিত হলে আপনার মধ্যে যে অনুভূতি হতো সেই অনুভূতি নিজের ভেতর থেকে বিকিরণ করা।
আসলে প্রকৃতির নিয়ম হচ্ছে, যা আপনার ভেতর থেকে বিকিরিত হবে সেটাই আপনার দিকে আকৃষ্ট হবে। কবিতা বিকিরণ করবেন, কবিতা আপনার দিকে আকৃষ্ট হবে। ঘৃণা বিকিরণ করবেন, ঘৃণা আপনার দিকে আকৃষ্ট হবে। মমতা বিকিরণ করবেন, মমতা আপনার দিকে আকৃষ্ট হবে। সাফল্যের অনুভূতি বিকিরণ করবেন, সাফল্য আপনার দিকে আকৃষ্ট হবে।
গাঁজার অনুভূতি বিকিরণ করবেন, গাঁজা আপনার দিকে আকৃষ্ট হবে। ধরুন, আপনি যে গলিতে থাকেন সে গলির মুখেই আছে এক পানের দোকান। আপনি প্রত্যেক দিন সেখান থেকে পান কিনে পান চিবুতে চিবুতে অফিসে যান। ১৫ বছর ধরে এটাই আপনার প্রতিদিনের রুটিন।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই দোকানে যে গাঁজা বিক্রি হয়, ১৫ বছর ধরে পান কিনে খেলেও আপনি তা জানেন না। অথচ দিনাজপুর থেকে কোনো এক গাঁজাখোরকে আপনার গলিতে এনে ছেড়ে দেন। প্রথমবার দোকানে এসেই সে দোকানদারের সাথে লেনদেন করে ফেলবে। কোনো ভাষা লাগবে না, চেনাজানা লাগবে না। কেন? কারণ এই গাঁজাখোরের মাথা থেকে শুধু একটাই চিন্তা বিকিরণ হচ্ছে—গাঁজা কোথায়! গাঁজা কোথায়! গাঁজা কোথায়! আর দোকানদারের মাথা থেকে কী বেরোচ্ছে? গাঁজা এইখানে! গাঁজা এইখানে! গাঁজা এইখানে! একজন শুধু আরেকজনের চোখের দিকে তাকাবে, ব্যস, লেনদেন হয়ে যাবে।
অথচ আপনি যে ১৫ বছর ধরে তাকে চেনেন, আপনি তাকে জিজ্ঞেস করে দেখেন, ‘গাঁজা আছে নাকি, একটু দাও তো’। আপনার দিকে সে তাকিয়ে বলবে ‘গাঁজা? কিসের গাঁজা? গাঁজা দিয়া কী করে’?—এমন ভান করবে যেন সে কিছুই জানে না। কারণ গাঁজা শব্দটি আপনার মুখ দিয়ে বেরোচ্ছে, ব্রেন থেকে বেরোচ্ছে না, মন থেকে বেরোচ্ছে না। সে আপনাকে দেখেই বুঝতে পারছে—গাঁজার ব্যাপারে আপনি দুই নম্বর লোক, আপনার অন্য কোনো মতলব আছে। আপনি গাঁজাখোর না।
অর্থাৎ আপনার ভেতরে যা অনুরণিত হবে সেটাই আপনার দিকে আকৃষ্ট হতে থাকবে। আপনি যদি প্রেসিডেন্ট হতে চান প্রেসিডেন্ট হলে যে রকম সুখ সুখ অনুভূতি হতো সে অনুভূতি ভেতরে নিয়ে আসতে হবে। প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসতে পারলে চেহারায় যে জেল্লা হতো, সেই জেল্লা যদি এখনই কল্পনায় অনুভব করতে পারেন, তাহলে আপনার প্রেসিডেন্ট হওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।