প্রশ্নঃ মনছবি আছে জীবনে বড় হবার। কিন্তু যেভাবে সবকিছু এগুচ্ছে মনে সন্দেহ জাগে। হতাশ হয়ে পড়ি। সবাই উৎসাহ দেয়। তারপরও সময়ের প্রেক্ষিতে খুব বেশি হতাশ হয়ে পড়ি। কী করতে পারি? মনছবি যা দেখি সেই লক্ষ্যে আমাকে পৌঁছাতে হবেই হবে। আমার কী করা উচিত?
উত্তরঃ আসলে আমাদের অধিকাংশের সমস্যা এটাই। আমরা বিশ্বাসে অটল থাকতে পারি না। বার বার খালি খোঁচাই। একটা মুরগি ডিম নিয়ে বসেছে, বাচ্চা ফুটতে তো ২১ দিন লাগবে, না ২১ দিনের আগে বাচ্চা ফোটে? এক ছাত্র তার শিক্ষককে বললো যে, এখন নতুন মেশিন বেরিয়েছে একদিনে বাচ্চা ফোটে। আমি দেখেছি আগের দিন ডিম একদিক দিয়ে ঢোকাচ্ছে, আর পরের দিন বাচ্চা অন্যদিক দিয়ে বের করছে। শিক্ষক ভাবলেন, একদিনে বাচ্চা ফোটে! এটা কেমন কথা! এটা তো হয় না। ঠিক আছে, খোঁজ লাগাও। তিনি খোঁজ লাগালেন, যেখানে মেশিনে মুরগির বাচ্চা ফোটানো হয় ওখানে গেলেন। গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, একদিনে নাকি বাচ্চা ফোটে? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, হাঁ, ঠিকই আছে। প্রত্যেকদিনই ঢোকানো হয় প্রত্যেকদিনই বের করা হয়, কিন্তু মাঝখানে ২১টা ফেজ আছে।
এই যে ডিমটা গেল, এটা তার পরের দিন দ্বিতীয় চেম্বার, তার পরের দিন তৃতীয় চেম্বার, তার পরের দিন চতুর্থ চেম্বার-এরকম ২০ দিনে ২০টা চেম্বার পার হয়ে ২১ দিনের দিন ডিম থেকে মুরগির বাচ্চা বের হচ্ছে। সে যেটা দেখেছিলো পরদিন সকালে, সেটা ২০ দিন আগে ঢোকানো হয়েছিলো, আগের দিনেরটা না। তো মুরগির ডিম মেশিনে ফোটান আর মুরগি দিয়ে ফোটান, ২১ দিন সময় তো দিতে হবে! এখন আপনি যদি প্রত্যেকদিন মুরগি উঠিয়ে উঠিয়ে দেখেন যে, বাচ্চা ফুটলো কি না তাহলে কি বাচ্চা হবে, না ডিম নষ্ট হয়ে যাবে?
আমাদের মনছবি হয় না এজন্যে। প্রত্যেকদিনই চিন্তা করি হলো কি না! কতদূর হলো দেখি। এ অস্থিরতা না করে বরং বিশ্বাসে অটল থাকতে হবে। এই যে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া, কী জানি, হবে কি হবে না, পাবো কি পাবো না, রবে কি রবে না-এই সন্দেহটাই হচ্ছে সকল বিনাশের একটা বড় কারণ। সেটা নিজের কাজের ব্যাপারে হোক, সেটা পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাপারে হোক, মনছবির ব্যাপারে হোক, পরিকল্পনার ব্যাপারে হোক-এই সন্দেহের চেয়ে নেতিবাচক শক্তি আর কিছু নেই। এই সংশয় এবং সন্দেহ হচ্ছে একজনকে ব্যর্থ করে দেয়ার জন্যে শয়তানের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। যখনই আপনি দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগুচ্ছেন, দৃঢ়তার সাথে চিন্তা করছেন, পরিকল্পনা করছেন, প্রোগ্রাম করছেন, তখনই শয়তান আপনার ভেতরে থাকা নেতিবাচক সত্তাটাকে উসকে দিচ্ছে। ফলে আপনি যে ১০ ধাপ এগিয়েছিলেন, এক ধাপ পিছিয়ে গেলেন।
কারণ আপনার ইতিবাচক শক্তি যেভাবে কাজ করছিলো সেখানে একটা ছেদ পড়ে গেল। আসলে সন্দেহ হচ্ছে এমন একটি বিষ যা ভেতরে থাকলে ক্রমাগত ক্যান্সারের মতো বাড়তে থাকে। সাধারণ সেল এবং ক্যান্সার সেল-এর মধ্যে তফাত কোথায়? সাধারণ সেল ভেঙে একটা থেকে দুটো হয়। ক্যান্সার সেল হয় একটা থেকে চারটা। যার ফলে সাধারণ অঙ্গের চেয়ে এটা বেড়ে যায়। সন্দেহও সেভাবে বাড়তে থাকে। অতএব সন্দেহ-সংশয়কে প্রশ্রয় দেবেন না। স্রষ্টার ওপর অবিচল বিশ্বাস রাখুন। বিশ্বাস রাখুন তাঁর দেয়া সামর্থ্যের ওপর। নিরলস পরিশ্রম করুন। যুক্তিসঙ্গত কল্যাণকর লক্ষ্যে আপনি পৌঁছবেনই।
Related Posts
Q&A Series – Episode 292: Failure is the pillar of success!
Q&A Series – Episode 291: What exactly is visualization?
Q&A Series – Episode 290: How does visualization work?