Business Care News

Business News That Matters

frog, fish, education

প্রশ্নোত্তর সিরিজ – পর্ব ১০৪: তাকে কি শিক্ষিত বা জ্ঞানী বলা যায়?

প্রশ্নঃ আমার এক আত্মীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী একজন মেধাবী সরকারি আমলা। কিন্তু তিনি ফাইল আটকে ঘুষ নেন, ব্যক্তিগত কাজে সরকারি সম্পদ ব্যবহার করেন এবং বাড়িতে স্ত্রীকে মারধর করেন। কিন্তু নিজেকে তিনি একজন শিক্ষিত, চৌকস ব্যক্তি মনে করে গর্ব করে থাকেন। তাকে কি শিক্ষিত বা জ্ঞানী বলা যায়?


উত্তরঃ সাম্প্রতিককালে কেউ যদি ইংরেজি ভালো বলতে পারেন তাকে আমরা ‘খুব জ্ঞানী লোক’ বলি। অথবা কোনো প্রযুক্তির ওপরে খুব ভালো বলতে পারেন, তাকে জ্ঞানী বলি।

সত্যিকারের জ্ঞানী এবং শিক্ষিত তিনিই যিনি জানেন এবং মানেন। অর্থাৎ যিনি শিক্ষাকে শুধু জানা পর্যন্ত সীমিত না রেখে নিজের জীবনেও তা বাস্তবায়িত করেন। কারণ শিক্ষা বা জ্ঞানের প্রভাব যদি কারো জীবনে না থাকে তাহলে তাকে কখনো শিক্ষিত বা জ্ঞানী বলা যায় না।

একজন ডাক্তার যদি শুধু পয়সার জন্যেই রোগী দেখেন এবং যে পয়সা দিতে পারে না তাকে বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে দেন, তিনি আর যা-ই হোন, শিক্ষিত নন।

একজন ইঞ্জিনিয়ার বা আমলা যদি ঘুষ খাওয়ার জন্যে ফাইল আটকে রাখেন, টাকা খেয়ে অযোগ্য প্রার্থীকে টেন্ডার দেন, তার অবস্থানও তখন একজন ধূর্ত, প্রতারক বা শোষকের চেয়ে আলাদা কিছু নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক যদি প্রভাবশালী মহলকে খুশি করার জন্যে অন্যায় কাজে সহযোগিতা করেন, তার মেধা ও বুদ্ধিও তখন হয়ে যায় অর্থহীন। একজন পেশাদার বক্তা ধূমপানের কুফল নিয়ে বক্তৃতা করার পর পরই যখন নিজে একটা সিগারেট ধরান তখন ধূমপানের বিরুদ্ধে বলার অধিকার নীতিগতভাবে তার আর থাকে না।

কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী হলেই আর মেধাবী, চৌকস বুদ্ধিজীবী হলেই জ্ঞানী হওয়া যায় না, যদি না তার আচরণে মানবিকতার বিকাশ ঘটে, যদি না তিনি তার জ্ঞানকে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করেন। তাকে বড়জোর ধূর্ত, প্রতারক বা শোষক বলা যায়। অবিদ্যা বা অপবিদ্যার প্রভাবেই মানুষ এরকম শোষকে পরিণত হয়।

তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড

Skip to content