Business Care News

Business News That Matters

security, insecurity, survival

প্রশ্নোত্তর সিরিজ – পর্ব ১৭৮: প্রাপ্য সম্মান না পেলে দৃষ্টিভঙ্গি!

প্রশ্নঃ অন্যদের কাছ থেকে যথাযথ মূল্যায়ন না পেলে, প্রাপ্য মর্যাদা বা সম্মান না পেলে দৃষ্টিভঙ্গি কী হওয়া উচিত?


উত্তরঃ আপনি হীনম্মন্যতাবোধে ভুগছেন। কারণ হীনম্মন্যতায় ভুগলেই একজন মানুষ অন্যের মূল্যায়ন নিয়ে মাথা ঘামায় বেশি এবং ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তা করে। তাকে ঠিকমতো সম্মান করে কথা বলল কি না, যত্ন করে খেতে দিলো কি না, তাকানোর মধ্যে কোনো তাচ্ছিল্য ছিল কি না ইত্যাদি, ইত্যাদি। অর্থাৎ তিনি যথোপযুক্ত মর্যাদা পেলেন কি না। তাদের হীনম্মন্যতার প্রকাশ ঘটে দুর্ব্যবহারের মধ্য দিয়ে।

খুব তুচ্ছ তুচ্ছ ব্যাপারে যদি আপনার মনোযোগ চলে যায়, যদি আপনাকে এটা বিভ্রান্ত করে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার রোগটা আসলে হীনম্মন্যতার, তার ব্যবহার নয়। যে জিনিসগুলোকে খুব সহজেই ওভারলুক করা যায়, একজন মানুষ যখন হীনম্মন্যতায় ভোগে তখন আর সে এত সহজে পারে না।

যারাই হীনম্মন্যতায় ভোগেন তারা সবসময় মর্যাদা-সচেতন থাকেন যে, আমাকে কতটুকু মর্যাদা দেয়া হলো কতটুকু অমর্যাদা করা হলো, আমাকে খাটো করা হলো না বড় করা হলো, আমাকে কি হেয় করা হলো, আমার প্রতি ঠিক যতটা হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত ছিল ততটা হাত বাড়িয়ে দিলো কি না, সে দরজা থেকে আমাকে রিসিভ করে নিয়ে গেছে না মাঝপথ থেকে রিসিভ করল! যার হীনম্মন্যতা নেই তিনি এগুলোতে কিছুই মনে করবেন না। রিসিভ করলে খুব ভালো, না করলে আরো ভালো।

আর অন্যের মতামতের মুখাপেক্ষী হলে আপনি কখনো আপনার জীবনের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করতে পারবেন না এবং প্রশান্তিতে থাকতে পারবেন না। যেমন, আপনি হয়তো আপনার পছন্দমতো একটা সালোয়ার কামিজ কিনে বাসায় এসে কয়েকজনকে দেখালেন।

দেখে একেকজন একেকরকম মন্তব্য করল। কেউ বলল ভালো হয়েছে, কেউ বলল মোটামুটি, আবার কেউ বলল একটুও ভালো হয় নি। তোমাকে তো একদম মানাবে না। কেউ আবার কোনো মন্তব্য না করে গম্ভীর হয়ে রইল। এত ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখে আপনি বিভ্রান্ত হয়ে গেলেন। এত পছন্দ করে দাম দিয়ে কেনা কাপড় আর এখন ভালো লাগছে না।

মতামত কখনো একরকম হবে না। দেখবেন বাজারে সব ধরনের জিনিসই পাওয়া যায়। আপনার কাছে যেটাকে খুব বাজে বলে মনে হয়, সেটাকেই দাম দিয়ে কিনে নিচ্ছে আরেকজন। আবার আপনার যেটা পছন্দ সেটা দেখেই আরেকজন নাক সিঁটকাচ্ছে। কারণ হয়তো আপনাকে একটু অস্থিরতায় ফেলে সে একধরনের আনন্দ পেতে চাইছে।

এসমস্ত ক্ষেত্রে খুব সরাসরি বলবেন, দেখুন ভাই বা আপা, আমি তো পছন্দ করে কিনতে পারি না। এরপর থেকে বাজারে গিয়ে আমার জন্যে আপনার যেটা পছন্দ সেটাই কিনে আনবেন। দেখবেন, আপনার পছন্দের পোশাক পরে আমি খুব সুন্দরভাবে আপনার সামনে আসব। তখন আপনারও কত ভালো লাগবে! এভাবে যখনই বলবেন, দেখবেন সে আর আপনাকে বলতে আসছে না। কারণ বলতে এলেই তো তাকে আপনার জন্যে কিনে দিতে হবে।

অর্থাৎ অমুকে কী বলবে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপনি যে কাজটা করছেন সেই কাজটা নৈতিক কি না, সেই কাজটা আপনার জন্যে কল্যাণকর কি না, সেই কাজটা মানুষের জন্যে কল্যাণকর কি না। ব্যস। আর কিছু আপনার দেখার দরকার নেই।

আপনি কারোটা খানও না, কারোটা পরেনও না। অতএব কারো অনুমোদনের ওপর আপনার নির্ভর করার কোনো প্রয়োজন নেই। জীবনে এই ‘পাছে লোকে কিছু বলে’—শোনা থেকে আপনি যত বিরত থাকতে পারবেন তত আপনি সফল হবেন, তত আপনি এই শেকল থেকে নিজেকে ছিন্ন করতে পারবেন।

তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড

Skip to content