প্রশ্নঃ ক্রেডিট কার্ডের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আপনি যা বলেছেন বুঝতে পেরেছি, কিন্তু বেশি পরিমাণ টাকা সাথে নিয়ে চলাফেরা করা নিরাপদ নয়। তাহলে ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও তো কোনো উপায় নেই।
উত্তরঃ আসলে প্রত্যেকটা কাজের পেছনে যদি একটা যুক্তি থাকে, তো প্রত্যেকটা অকাজের পেছনেও ১০১টা যুক্তি আছে। আপনি একটা চোরকে জিজ্ঞেস করেন, কেন তুমি চুরি করলে? সে চুরির পক্ষে ১০১টা পয়েন্ট বলতে পারবে। কিন্তু সেই ১০১টা পয়েন্ট চুরিকে জাস্টিফাই করে না। যেরকম, আপনি বলছেন ‘ক্রেডিট কার্ড ছাড়া উপায় নেই’-ক্রেডিট কার্ড যারা বিক্রি করে তারা কিন্তু এই কথাই বলে। আমাদের দেশে এখন ক্রেডিট কার্ড যারা বয়ে বেড়াচ্ছেন তাদের সংখ্যা ছয় লক্ষের বেশি (!) এবং ক্রেডিট কার্ডে ভোক্তা ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ১১ হাজার কোটি টাকা! আমাদের দেশের আসলে কী অবস্থা? যারা দরিদ্র ছিলো, ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে তাদের অতিদরিদ্র করা হয়েছে; এবার মধ্যবিত্তকে দরিদ্র করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কারণ যত এই ভোগ্যপণ্যের ঋণ বাড়তে থাকবে তত ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে যাবে, দাম বেড়ে যাবে এবং মূল্যস্ফীতি ঘটবে। আমাদের এখনকার যে মূল্যস্ফীতি-দামের যে এত বৃদ্ধি-এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ক্রেডিট কার্ড এবং ভোক্তা ঋণ। কাজেই ‘ক্রেডিট কার্ড ছাড়া উপায় নেই’-এমনটা ভাবা হলো বোকামি। আর টাকা সাথে রাখাটা যেহেতু অসুবিধা, আপনি এটিএম কার্ড করতে পারেন। এখন তো মোটামুটি সবখানেই এটিএম কার্ড-এর ব্যবস্থা আছে। ক্রেডিট কার্ডের চেয়ে এটিএম কার্ড ভালো। এতে আপনার নিজের একাউন্টের টাকা আপনি তুলছেন এবং অতিরিক্ত ব্যয় করার ব্যাপারে সতর্ক থাকছেন। কারণ নিজের টাকা কেউ বেহিসেবি ব্যয় করতে চায় না। কিন্তু ঋণের টাকার প্রতি ঐ মায়া থাকে না। ওটা দিয়ে অপচয়ও তাই বেশি হয়।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড