প্রশ্নঃ ছোটবেলা থেকে আমি হারকিউলিস, রবিন হুড, সুপারম্যান, স্পাইডারম্যানসহ আরো অনেক মুভি দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। এখন আমার সমস্যা হলো, যখন কোনো পত্রিকায় ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অনাচারের খবর দেখি তখন মাথা গরম হয়ে যায়। কল্পনায় আমি কখনো সুপারম্যান, কখনো স্পাইডারম্যান হয়ে সমস্যার সমাধান করে ফেলি। কিন্তু যখন বাস্তবে ফিরে আসি তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। খুব কান্না করি।
উত্তরঃ এর মধ্য দিয়ে কিন্তু আমরা সেই চিরায়ত সত্যটা বুঝতে পারছি যে, আমাদের নার্ভাস সিস্টেম বাস্তবতা এবং কল্পনার মধ্যে কোনো তফাত করতে পারে না। মুভি দেখতে দেখতে আপনি নিজেকে সুপারম্যান বা স্পাইডারম্যান ভাবা শুরু করেন এবং অন্যায় দেখলে কল্পনায় স্পাইডারম্যান, সুপারম্যানের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু পরে দেখেন যে, না, যেখানে ছিলেন সেখানেই আপনি বসে আছেন। আসলে এই যে ছোটবেলা থেকে এসব কাল্পনিক মুভি, টিভি বা ইন্টারনেট দেখার পরিণতি যে কত মারাত্মক হতে পারে তা আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস – শিশুস্বাস্থ্য নিয়ে যাদের কাজ, তাদের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে। এর মধ্যে আছে সাইবার বুলিয়িং, সেক্সটিং, ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস ইত্যাদি। পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড-এর গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিশু কম্পিউটার, টেলিভিশন ও ভিডিও গেম নিয়ে দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকে তারা হয়ে পড়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও হীনম্মন্যতার শিকার। গার্ডিয়ানে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়, যে শিশুরা সারাক্ষণ স্মার্টফোন, ট্যাব ও কম্পিউটারের স্ক্রিনে সেঁটে থাকে, তারা কোনো কিছুতেই দীর্ঘসময় মনোযোগ ধরে রাখতে পারে না।
এখন আপনার ক্ষেত্রে যা হবার হয়ে গেছে। কিন্তু যেহেতু আপনি মেডিটেশন জানেন, ব্রেন ও অবচেতন মনের শক্তিকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করুন- নিজের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে। আর মনে রাখবেন, সুপারম্যান বা স্পাইডারম্যান নয়, অন্যায়ের প্রতিকার সবসময় মানুষই করেছে। মানুষের ওপর মানুষ অন্যায় করেছে, আবার এর প্রতিকারও মানুষই করেছে। যদি ভেতরের শক্তিকে জাগ্রত করতে পারেন, তবে বুঝবেন মানুষের শক্তি স্পাইডারম্যানের থেকে বেশি। অতএব ভেতরের শক্তিকে জাগ্রত করুন। বাস্তববাদী হোন এবং ফাউন্ডেশনের সাথে একাত্ম হোন। কারণ আপনি কল্পনায় যা করতে চাচ্ছেন, আমরা বাস্তবে বাস্তবসম্মত উপায়ে তা-ই করার জন্যে কাজ করছি। অর্থাৎ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের কাজ। কারণ সমাজের অধিকাংশ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি যদি বদলে যায়, মানুষ যদি অন্যায় থেকে বিরত থাকে তো অন্যায় অবিচার এমনিই দূর হয়ে যাবে। কাজেই সবার আগে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে, ইতিবাচক মানুষের সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং আমরা সে কাজটাই করছি।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড
Related Posts
Q&A Series – Episode 292: Failure is the pillar of success!
Q&A Series – Episode 291: What exactly is visualization?
Q&A Series – Episode 290: How does visualization work?