Business Care News

News That Matters

dna, helix, string

প্রশ্নোত্তর সিরিজ – পর্ব ২৩১: জেনেটিক অসুখ নিরাময়ে মেডিটেশন

প্রশ্নঃ আমি অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় ভুগি। দুই বছর যাবৎ স্নায়বিক রোগের ওষুধ সেবন করছি। সমস্যাটি আমার বংশগত। আমার বাবারও এ সমস্যা রয়েছে। তিনিও দীর্ঘদিন স্নায়বিক রোগে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আমি কোন মেডিটেশন করলে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করব? যেহেতু, আমার এ অসুখটি জেনেটিক, এটি কি মেডিটেশনের মাধ্যমে নিরাময় হবে? জানালে অত্যন্ত উপকৃত হবো।


উত্তরঃ সাধারণভাবে মনে করা হয়, একজন মানুষ দেখতে কেমন হবে, তার চুল বা চোখের রঙ কেমন হবে, সে রাগী হবে না শান্ত হবে, চঞ্চল হবে না ধীরস্থির হবে-এ সবকিছু নির্ধারিত হয় জিন দ্বারা, বাবা-মায়ের কাছ থেকে বংশ পরম্পরায় যা সে পেয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সে কী কী রোগে আক্রান্ত হতে পারে- সেটাও ঠিক হয় বংশধারা দ্বারা। বাবা বা দাদার ডায়াবেটিস থাকলে সে-ও ধরে নেয় তার ডায়াবেটিস হবে, নিজের স্কিন এলার্জি হলে সে মনে করে মায়ের ছিল, তাই হয়েছে। ব্যাপারটা যেন নিয়তির মতো, কিছুই আর করার নেই।

কিন্তু এখন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, অবশ্যই কিছু করার আছে, আর তা হলো মেডিটেশন এবং সেটার প্রমাণও তারা দিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, একজন মানুষ ক্যান্সার-আক্রান্ত হওয়ার পেছনে যেমন জিনের ভূমিকা আছে, তেমনি তার দেহে আছে ক্যান্সার প্রতিরোধক জিনেরও অস্তিত্ব। তার ক্যান্সার হবে কি না তা নির্ভর করছে কোন জিনটা সুইচ অন করা আর কোনটা সুইচ অফ করা। বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, এই সুইচ অন/ অফ ব্যাপারটাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, সুস্থ জীবনদৃষ্টি এবং অবশ্যই মেডিটেশনের মতো নিয়ামকগুলো দিয়ে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

বেনসন-হেনরি ইনস্টিটিউট ফর মাইন্ড-বডি মেডিসিন এক গবেষণায় ১৯ জন স্বেচ্ছাসেবীকে নিয়ে দেখেছে, তাদের দেহের ১০০০ – এর বেশি স্ট্রেস জিন সুইচ অফ হয়ে গেছে নিয়মিত মেডিটেশন করে। এরা দীর্ঘদিন ধরে মেডিটেশন করছিলেন। অন্যদিকে যারা মেডিটেশন করেন না, তাদের দেহে দেখা গেছে এর দ্বিগুণেরও বেশি স্ট্রেস জিনের উপস্থিতি। আর স্ট্রেস জিনের উপস্থিতি মানেই ব্যথা-বেদনা, উচ্চ রক্তচাপসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যা।

মজার ব্যাপার হলো-যারা মেডিটেশন করেন না, তাদের মেডিটেশন শেখানো এবং আট সপ্তাহ ধরে মেডিটেশন করানোর পর দেখা গেছে, তাদের দেহের ৪৩৩টি স্ট্রেস জিন সুইচ অফ হয়ে গেছে।

ডা. ডীন অরনিশ পরিচালিত আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে-মেডিটেশন ক্যান্সার অনুঘটক জিনের ওপর প্রভাব ফেলছে। প্রোস্টেট ক্যান্সারের প্রাথমিক অবস্থায় আছেন এমন পুরুষদের নিয়মিত মেডিটেশন করিয়ে দেখা গেছে, তাদের দেহের প্রায় ৫০০ জিনের আচরণ বদলে গেছে। ক্ষতিকর জিনগুলো দমে গেছে, উপকারী জিনগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

কাজেই আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের ক্ষেত্রেও যেখানে জেনেটিক প্রভাবকে মেডিটেশন নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে সেখানে স্নায়বিক সমস্যায়ও এটি কার্যকরী হবে। আপনি নিয়মিত দুবেলা মেডিটেশন করুন। শিথিল প্রক্রিয়ায় মেডিটেশন করুন। ছয় মাস পর আপনি নিজেই বুঝবেন আপনার পরিবর্তন।

তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড

Skip to content