প্রশ্নঃ দুই বন্ধুর একজন নিয়মিত পড়ে এবং আরেকজন পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে থেকে পড়ালেখা করে এবং সেই ছেলেটি ক্লাসে প্রথম সারিতে থাকে। এর কারণ কী?
উত্তরঃ আসলে এখানে আপনার যেটা মনে হচ্ছে, সেটা ঠিক নয়। কারণ এক সপ্তাহ আগে পড়ে কখনো ক্লাসে প্রথম সারিতে থাকা সম্ভব নয়। সে হয়তো প্রতিদিনের পড়াগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করে রাখত। অর্থাৎ তার প্রস্ত্ততিটা এতই নিয়মিত যে, তা আলাদা করে চোখে পড়ে নি। আর আরেক যে বন্ধুর কথা বলেছেন তাকে নিয়মিত পড়তে দেখলেও তার পড়ার মধ্যে সমস্যা রয়েছে। অর্থাৎ অনেক সময় নিয়ে পড়লেও পড়াটা ঠিক কার্যকরী হচ্ছে না। অথবা তার পড়া আর ভালো রেজাল্টের মধ্যে ফাঁকটা হচ্ছে পরীক্ষা।
তার পরীক্ষাগুলো হয়তো ততটা ভালো হচ্ছে না। আর এজন্যে তাকে যেটা করতে হবে তা হলো ভুল থেকে শেখার অভ্যেস করতে হবে। সিরিয়াসলি নিতে হবে মডেল টেস্ট বা ক্লাস টেস্ট বা মক টেস্ট অর্থাৎ মূল পরীক্ষার আগের এই পরীক্ষাগুলোকে। ভালো পরীক্ষার জন্যে উত্তর লেখার সময় অনুসরণ করতেন—সফল শিক্ষার্থীদের এরকম কিছু টিপস নিয়ে গ্রন্থিত আমাদের শিক্ষার্থী কণিকা থেকে কিছুটা এখানে উদ্ধৃত করা হলো :
- হলে নিজের আসনে পরীক্ষা শুরুর অন্তত ১৫ মিনিট আগে বসুন।পাঁচ মিনিট মেডিটেশন করুন। অটোসাজেশন দিন—‘যা পড়েছি সব মনে আছে। লেখার সময় সুন্দরভাবে তা মনে চলে আসবে।’
- প্রশ্নপত্রের উভয়পিঠ ভালোভাবে পড়ুন। নির্দেশনাগুলো খেয়াল করুন।
- প্রতিটি প্রশ্নের জন্যে সময় ভাগ করে ফেলুন। বরাদ্দকৃত সময়ে শেষ না হলে ফাঁকা রেখে পরের প্রশ্নে চলে যান।
- জটিল প্রশ্নের নয়; শুরু করুন ভালোভাবে জানা উত্তরটি দিয়ে।
- শেষ ৫/১০ মিনিট খাতা রিভাইজ করুন।
- কোনো প্রশ্ন ছেড়ে আসবেন না। কারণ দুটো অর্ধেক উত্তর একটি সম্পূর্ণ উত্তরের চেয়ে বেশি নম্বর তুলবে।
- বাধ্যতামূলক না হলে জটিল বা সঠিক উত্তর জানা নেই—এমন প্রশ্ন এড়িয়ে চলুন। কারণ, উত্তরে গোঁজামিল থাকলে নম্বর আরো কমে যেতে পারে।
- প্রশ্নের উত্তর তিন ভাগে ভাগ করুন—ভূমিকা, মূল বক্তব্য ও উপসংহার। ভূমিকা ও উপসংহার যত্ন করে লিখুন।
- উত্তরে বৈচিত্র আনতে ডায়াগ্রাম, ছক, চিত্র ব্যবহার করুন।লেখক/ বইয়ের কিছু শব্দ/ বাক্য উদ্ধৃত করুন।
- কোন প্রশ্নের উত্তরে কী জানতে চাওয়া হয়েছে তা বুঝে লিখুন। কোন অংশের জন্যে কত নম্বর তা-ও দেখুন।
- কোনো প্রশ্নের উত্তর বা পয়েন্ট মনে করতে না পারলে ফাঁকা জায়গা রেখে পরবর্তী প্রশ্ন বা পয়েন্ট লিখতে থাকুন।
- খাতা জমা দেয়ার সময় নাম, রোল, রেজি. নম্বর ঠিক আছে কি না তা নিশ্চিত হোন। অতিরিক্ত কাগজ নিলে স্টেপলিং বা সুতোর গিঁঠ ঠিকভাবে দিন। নইলে ভালো পরীক্ষা দিয়েও আশানুরূপ ফল না-ও হতে পারে।
সারাবছর পড়াশোনা করেও ভালো না করার কারণ হতে পারে এ টিপসগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ না করা। কাজেই প্রথম বন্ধুটির কর্তব্য হবে পরীক্ষা শেষে পর্যালোচনা করা যে, কী কী ভুল সে করেছে, ভুলের ধরন কী এবং কোথায় কোথায় আরো ভালো করা যেত ইত্যাদি। এবং পরের পরীক্ষায় সেগুলোকে শুধরে নিতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড
Related Posts
Q&A Series – Episode 292: Failure is the pillar of success!
Q&A Series – Episode 291: What exactly is visualization?
Q&A Series – Episode 290: How does visualization work?