প্রশ্নঃ ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি ধার্মিক হতে হলে, ভালো মানুষ হতে হলে গরিব থাকতে হবে। ধনী হলে আল্লাহকে পাওয়া যাবে না—এটা কি ঠিক?
উত্তরঃ না, এটা ভ্রান্ত ধারণা; এটা জাহেলিয়াত। নবী-রসুলরা কি গরিব ছিলেন? হযরত ইবরাহীম (আ)-কে যখন কোরবানি দিতে বলা হলো—প্রথমে তিনি ১০০ দুম্বা, পরে ১০০ উট কোরবানি দিয়েছিলেন। ১০০ উটের দাম এখন কমপক্ষে দুই কোটি টাকা। দুই কোটি টাকা যিনি একদিনে ব্যয় করতে পারেন তাকে কি গরিব বলা যায়? প্রথম জীবনে রসুলুল্লাহ (স) সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। আর মক্কা বিজয়ের পর আরবের অধিপতি হন তিনি। হযরত ওমর অর্ধেক পৃথিবীর শাসক ছিলেন। তাঁরা কি ধার্মিক ছিলেন না?
মুনি-ঋষিরা আশ্রমে থাকতেন বলে কি তাঁরা গরিব ছিলেন? তখনকার দিনে আশ্রমগুলো ছিল একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়—জ্ঞানার্জনের পীঠস্থান। অশ্বমেধযজ্ঞে সহস্র ঘোড়া বলিদানের বিবরণ পাওয়া যায়। রঘুপতি রাঘব রাজা রামচন্দ্র অযোধ্যার রাজা ছিলেন, মহামতি বুদ্ধ রাজকুমার ছিলেন। যারা ধ্যানের পথে আসেন, স্রষ্টার সংযুক্তির পথে আসেন তারা কখনো দরিদ্র থাকেন না। তারা বিলাসিতা করেন নি, তাদের সম্পদ মানুষের জন্যে বিলিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তারা দরিদ্র ছিলেন না।
এক্ষেত্রে আমরা বোখারী শরীফের একটি হাদীস স্মরণ করতে পারি—‘দুই ব্যক্তিকে তুমি ঈর্ষা করতে পারো—আল্লাহ যাকে জ্ঞান দান করেছেন এবং যিনি এই জ্ঞান সৃষ্টির সেবায় বিতরণ করেন। আর আল্লাহ যাকে সম্পদ দিয়েছেন এবং যিনি সৃষ্টির কল্যাণে এই সম্পদ ব্যয় করেন।’ অর্থাৎ সম্পদশালী হওয়া ও সৃষ্টির কল্যাণে সে সম্পদ ব্যয় করা ঈর্ষণীয় বিষয়। অতএব ধার্মিক হতে হলে গরিব থাকতে হবে—এ ধারণা একেবারেই ভুল।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড