প্রশ্নঃ সবসময় কি রাগ দমন করা যায়? কেউ যখন খারাপ ব্যবহার করে বা অন্যায় সুযোগ নিতে চায়, তখন কি শান্ত থাকা সম্ভব?
উত্তরঃ অবশ্যই সম্ভব। কারণ খারাপ ব্যবহার বা অন্যায় সুযোগ গ্রহণের প্রতিবাদে আপনিও যদি খারাপ ব্যবহার করেন বা রাগারাগি করেন তাহলে আপনি নিজেকে তার স্তরেই নামিয়ে নিলেন। আর ক্রোধ দিয়ে বা উন্মত্ততা দিয়ে কখনো অন্যায়ের প্রতিকার করা যায় না।
কারণ ক্রোধ বা উত্তেজনা একজন মানুষের স্বাভাবিক বিচার-বুদ্ধি নষ্ট করে দেয়। সে তখন ভুল সিদ্ধান্ত নেয় বা ভুল কাজ করে এবং হয়তো শত্রুর পাতা ফাঁদেই পা দেয়। কারণ রাগ এমন এক বিধ্বংসী আবেগ যা সুনামির মতো সবকিছুকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তাই কেউ খারাপ ব্যবহার করলে বা অন্যায় সুযোগ নিতে চাইলে প্রথমত শান্ত থাকতে হবে এবং ঠান্ডা মাথায় কৌশল ভাবতে হবে। আর এ পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে তা এড়ানো যায়।
এমনকি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করলেও যে শান্ত থাকা যায় সে উদাহরণ ধর্মীয় মহামানবরা দিয়ে গেছেন। মহামতি বুদ্ধ, যীশুখ্রিষ্ট বা নবীজী (স) কখনো বিরুদ্ধবাদীদের অন্যায় আচরণে ক্ষুব্ধ হন নি। নবীজী (স) যখন তায়েফে ধর্মপ্রচার করতে গিয়েছিলেন, তখন তায়েফবাসীরা পাথরের পর পাথর মেরে তাঁকে রক্তাক্ত করেছিলো। কিন্তু তারপরও তিনি তাদের ক্ষমা করেছেন, তাদের কল্যাণের জন্যে প্রার্থনা করেছেন। অন্যের উপাস্যকে গালি দিতে তিনি নিষেধ করেছেন। কারণ তখন আমার উপাস্যকে পাল্টা গালির জন্যে দায়ী হবো আমিই। কাজেই ধর্মীয় দৃষ্টিতেও রাগ নিন্দনীয় এবং বর্জনীয়। তাই রাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
সবসময় মনে রাখতে হবে যে, ‘রেগে গেলাম তো হেরে গেলাম’। কারণ যুগে যুগে দেশে দেশে যে ব্যক্তি বা জাতি রেগে গেছে তারাই পরাজিত হয়েছে। যারা ঠান্ডা মাথায় কাজ করেছে তারাই জয়ী হয়েছে।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড