Business Care News

Business News That Matters

yoga, meditation, woman, lake

প্রশ্নোত্তর সিরিজ – পর্ব ৮৮: কেন মেডিটেশন করব?

প্রশ্নঃ আমার তো কোনো সমস্যা নাই, রোগ নাই, আমি তো ভালোই আছি। আমি কেন মেডিটেশন করব?


উত্তরঃ শুধু সমস্যা থাকলেই মেডিটেশন করতে হয়-এটা একটা ভুল ধারণা। বরং আসলে সফল মানুষেরা মেডিটেশন করেন। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিল্পপতিরা মেডিটেশন করেন। রাষ্ট্রনায়ক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, প্রশাসকরা, পেন্টাগনের জেনারেলরা করেন। কেন করেন? প্রশান্তির জন্যে, মস্তিষ্ককে আরো বেশি ব্যবহার করার জন্যে।

আমরা আজ থেকে ২০ বছর আগে, ১৯৯৩ সালে বলেছি যে, মেডিটেশন হচ্ছে বিজ্ঞান, মেডিটেশন হচ্ছে সায়েন্স। এটা কোনো ভোজবাজি নয়, অলৌকিক কিছু নয়। কারণ অলৌকিকত্ব এবং বিজ্ঞানের মধ্যে তফাত হচ্ছে অলৌকিক কিছুকে রিপিট করা যায় না। কিন্তু বিজ্ঞানের যে-কোনো জিনিসকে রিপিট করা যায়। মেডিটেশনকে আমরা বিজ্ঞান বললাম ১৯৯৩ সালে, আর ২০০৩ সালে টাইম ম্যাগাজিন প্রচ্ছদ নিবন্ধ করল -The Science of meditation অর্থাৎ মেডিটেশনের বিজ্ঞান।

এ নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘এক কোটি আমেরিকান এখন নিয়মিত মেডিটেশন চর্চা করেন। নব্বই দশকের তুলনায় এ সংখ্যা দ্বিগুণ। ব্যস্ত অফিস এক্সিকিউটিভের এ যুগে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে দলে দলে আমেরিকানরা এখন ঝুঁকছেন মেডিটেশনের দিকে। যার প্রমাণ মেডিটেশনের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে এখন বিপুল সংখ্যায় মূলধারার জনগণের উপস্থিতি। দিন দিন মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা এত বাড়ছে যে, মেডিটেশন অবিশ্বাসীরাই এখন সেখানে সংখ্যালঘু। মেডিটেশনের এই ব্যাপক বিস্তৃতির কারণ হলো, রহস্যের আবরণ থেকে বেরিয়ে মেডিটেশনের প্রক্রিয়া এখন অনেক সহজ ও ফলপ্রসূ। সেইসাথে রয়েছে মেডিটেশনের ওপর পরিচালিত অসংখ্য বৈজ্ঞানিক গবেষণার ইতিবাচক ফল।’

মূলধারার জনগণের পাশাপাশি মেডিটেশনকারীদের দলে নাম লিখিয়েছেন বিখ্যাতরাও। এদের মধ্যে আছেন ফোর্ড মটরসের প্রধান ধনকুবের বিল ফোর্ড, সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর দম্পতি, বর্তমান পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারী ক্লিনটন এবং হলিউডের নামি-দামি সব শোবিজ তারকা। তাদের তো অর্থ, খ্যাতি, ক্ষমতা কোনোকিছুর অভাব নেই। তারপরও কেন মেডিটেশন করেন। প্রশান্তির জন্যে। এই ব্রেনটাকে আরো সুন্দরভাবে, আরো ভালোভাবে কাজে লাগানোর জন্যে, আরো সফল হওয়ার জন্যে।

পিছিয়ে নেই আমাদের দেশের সফলরাও। গত দুদশক ধরে কোয়ান্টাম মেথড কোর্সে অংশ নিয়েছেন দেশের বরেণ্য চিকিৎসাবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, সমাজতাত্ত্বিক, ধর্মবেত্তা, কবি, লেখক, শিল্পীসহ সফল ব্যবসায়ী, সমাজপতি ও শোবিজ স্টার। পাশ্চাত্যের খ্যাতিমানদের মতো তারাও মেডিটেশন করছেন প্রশান্তির জন্যে, সফল হওয়ার জন্যে।

জাতীয় অধ্যাপক ডা. এম আর খান। বাংলাদেশে শিশু চিকিৎসার সূচনা ও বিকাশে জীবন্ত কিংবদন্তীর নাম। ৮৫ বছর বয়সেও ঈর্ষণীয় কর্মক্ষমতার অধিকারী এই মানুষটি কোয়ান্টাম মেথড কোর্সের ৩২৮ ব্যাচে পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশ নেন।

চারটি দিন ৪০ ঘণ্টার পুরোটা সময় এত নিবিষ্টচিত্তে কেন তিনি কোর্সে ছিলেন সেকথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘আসলে শেখার কোনো শেষ নেই। নেই কোনো বয়স। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত একজন মানুষ শিখতে পারে। হলভর্তি এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে টানা চার দিন শুধুমাত্র কথার মাধ্যমে গুরুজী যেভাবে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখলেন-এটি সত্যিই আমার খুব অবাক লাগছে।

আশ্চর্যের ব্যাপার হলো-চিকিৎসাবিজ্ঞানের মানুষ বলে আমি জানি, আমাদের মস্তিষ্কে যে লক্ষ কোটি নিউরোন রয়েছে, তার অধিকাংশই আমরা ব্যবহার করি না। কিন্তু এগুলোকে কীভাবে উজ্জীবিত করতে হয়, কাজে লাগাতে হয়, গুরুজী তা চমৎকার বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনায় আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। আমি বলব, সব ধরনের নেতিবাচকতা থেকে মুক্ত হয়ে একজন ইতিবাচক মানুষ হয়ে ওঠার দিক-নির্দেশনা রয়েছে কোয়ান্টামে।’’

শুধু কোর্সই নয়, বছরখানেক পর ৩৪৩ ব্যাচে তিনি কোর্সটি রিপিটও করেন পুরো চার দিন। ডা. এম আর খানের মতো একজন কর্মব্যস্ত জাতীয় ব্যক্তিত্ব যখন চার দিন সময় করতে পারেন, তখন একজন সফল মানুষ কেন মেডিটেশন করবে, কেন কোর্স করবে সে প্রশ্ন বোধ হয় আর থাকে না।

তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড

Skip to content