২০২৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আফ্রিকার ভার্চুয়াল বাজারে বাড়তি প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের সামনে। তবে সুযোগটি কাজে লাগাতে হলে একটি আন্তর্জাতিক মানের ই-কমার্স প্ল্যাটফরম তৈরি করতে হবে।
পোশাক খাতের জন্য ভার্চুয়াল মার্কেটপ্লেস প্ল্যাটফরম স্থাপনের সম্ভাব্যতা গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পক্ষে গবেষণাটি করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনারস। এতে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) পার্টনারশিপ ফর ক্লিনার টেক্সটাইল (প্যাক্ট টু) প্রোগ্রাম।
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশের পোশাক চার দশক ধরে সফলভাবে কাজ করলেও নিজস্ব ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এটির পরিবর্তন করতে চাই। আমরা নিজেদের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আর ডিজিটাল প্ল্যাটফরম হতে পারে আমাদের জন্য একটি কৌশলগত এন্ট্রি পয়েন্ট। রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে বৃহস্পতিবার এই গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন লাইটক্যাসল পার্টনারসের কর্মকর্তা দিপা সুলতানা।
তিনি বলেন, ২০২৬ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আফ্রিকায় তৈরি পোশাকের ভার্চুয়াল বাজার বেড়ে ৩০ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে। আর ২০২৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউর বাজারের পোশাক বিক্রির এক-তৃতীয়াংশই অনলাইনে স্থানান্তরিত হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভার্চুয়াল পোশাকের বাজারের মাত্র দশমিক ২০ শতাংশ, ইইউর দশমিক ১০ শতাংশ এবং আফ্রিকার দশমিক ৭৫ শতাংশ হিস্যা নিতে পারলেই ৪৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার মূল্যের অতিরিক্ত তৈরি পোশাক রপ্তানি করা সম্ভব। যা ডলারের বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী ৫ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকার মতো।
লাইটক্যাসলের প্রতিবেদনে ভার্চুয়াল মাধ্যমে ব্যবসা থেকে ব্যবসা (বিটুবি) এবং ব্যবসা থেকে ভোক্তা এই দুই ক্ষেত্রে সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, ভার্চুয়াল মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণের ফলে নতুন বাজার ও ক্রেতার সন্ধান মিলবে। তাতে ব্যবসার পরিমাণ বাড়বে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর নেতারা জানান, করোনার সময় যখন পোশাক রপ্তানির আদেশ বাতিল হচ্ছিল আর বাজারগুলোতে ভার্চুয়াল ব্যবসা বাড়ছিল, তখন এই মার্কেটে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রথাগত ব্যাংকিং ও কাস্টমস নিয়মনীতি ভার্চুয়াল বাজারের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অর্থাৎ বেশ কিছু বিধিবিধান বিশেষ করে, ব্যাংকিং ও কাস্টমস নিয়মনীতি সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। তাছাড়া ভার্চুয়াল বাজার যেহেতু একটি নতুন বিষয়, তাই শিল্পের ভেতরে কিছু প্রস্তুতি ও সমন্বয়ের প্রয়োজন রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করা ও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। পুরো বিষয়টি স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে করার জন্য গবেষণাটি করা হয়।
ফারুক হাসান আরও বলেন, ‘বিদায়ি বছরে (২০২৩) আমাদের পোশাক রপ্তানি ৪ হাজার ৭৩৮ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। এর আগের বছর বৈশ্বিক বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আমাদের হিস্যা ছিল ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আশা করছি, ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের এই হিস্যা ১২ শতাংশে নিয়ে যেতে পারব। এজন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন এবং তা কাজে লাগাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
লোহিতসাগরে পণ্যবাহী জাহাজে হামলার প্রভাব পোশাক রপ্তানিতে কতটা পড়েছে জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, ‘আগের চেয়ে পণ্য পরিবহনে সময় বেশি লাগছে। জাহাজ ভাড়া বেড়ে গেছে। তাতে কষ্ট বেড়েছে। আমাদের পোশাক রপ্তানির বড় অংশই ফ্রেইট অন বোর্ড বা এফওবিতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় জাহাজ ভাড়া দেয় বিদেশি ক্রেতারা। ফলে চাপটাও তাদের ওপরই বেশি পড়ছে
Related Posts
Top Foreign Companies Investing in Bangladesh
Global Giants: Unveiling the Top Investor Nations Fueling Bangladesh’s Growth
Bangladeshi Air Conditioner Exports Reach $14.26 Million in FY 2022-23