কম্পিউটার উৎপাদনে এবার আগাম কর প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। স্থানীয়ভাবে কম্পিউটার উৎপাদন শিল্পকে এগিয়ে নিতেই এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি এসআরও জারি করে সংস্থাটি। এর আগে কম্পিউটার উৎপাদনে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অব্যাহতি দিয়েছিল এনবিআর। দেশী উৎপাদকদের আগাম কর রিফান্ড দেয়ার জটিলতা এড়াতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে একটি এসআরও জারি করে প্রায় ২৬টি এইচএস কোডের আওতায় উৎপাদন পর্যায়ে কম্পিউটারের বিভিন্ন ধরনের পণ্যসামগ্রীর ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করে সংস্থাটি। দেশে কম্পিউটার উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে ও স্থানীয়ভাবে এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে এ সুবিধা দেয়া হয়। পরে আরো কিছু কর সুবিধা দেয়ার দাবি জানায় এ খাতের দেশী বিনিয়োগকারীরা। এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই আগাম কর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কম্পিউটারসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলেও নেয়া হচ্ছিল আগাম কর। ফলে এ খাতের বিনিয়োগকারীদের রিফান্ডের অর্থের পরিমাণ বাড়ছিল। আর এনবিআর থেকে রিফান্ড দেয়া যেহেতু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই এ জটিলতা এড়াতে আগাম করও প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এনবিআরের এ সুবিধার ফলে উৎপাদনকারীদের অগ্রিম ট্রেড ভ্যাট দিতে হবে না। এতে তাদের সুবিধা হবে। তিনি ল্যাপটপ ও প্রিন্টার আমদানিতেও ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান।এ বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি কম্পিউটার উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেয়া মানেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমদানি পর্যায়েও অব্যাহতি হয়ে যায়। যদি এর পরও প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় ভ্যাট দিতে হয়, তাহলে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। অর্থাৎ এতে ভ্যাট অব্যাহতি আর থাকল না।’
খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, ভ্যাট অব্যাহতির পরও আগাম কর দিয়ে এ খাতের উৎপাদনকারীদের বাজারে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছিল। কারণ উৎপাদনকারীরা ঋণ নিয়ে এখানে বড় বিনিয়োগ করে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর থেকে তাদের ঋণের টাকা পরিশোধ শুরু করতে হয়। এক্ষেত্রে এনবিআরকে আগাম কর দিয়ে তা রিফান্ড পাওয়াও সময়সাপেক্ষ। রয়েছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার বিষয়ও। এমন বাস্তবতায় আগাম কর অব্যাহতি দেয়ায় বিনিয়োগকারীদের কিছুটা সুবিধা হবে। এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে আমদানিকারক ও উৎপাদকারীদের শুল্ক-করের ব্যবধান আরো বাড়াতে হবে বলে মনে করেছেন তারা।