
এবিবির সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার , ছবি: সংগ্রহীত
ব্যাংক খাতে নৈতিকতা ও সুশাসন নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেছেন, ‘সুশাসন নিশ্চিত ও ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের শক্তিশালী ভূমিকাই খেলাপি ঋণ সমস্যার একমাত্র সমাধান হতে পারে।’ রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে গতকাল দুই দিনের ‘ব্যাংকিং অন ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এমন কথা বলেন।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘ব্যাংক খাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে করপোরেট সুশাসন ও খেলাপি ঋণ। এর সমাধানে আমাদের প্রয়োজন ব্যাংকিং আচরণে নৈতিকতার চর্চা, ব্যাংক কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সুশাসন নিশ্চিত করা। ব্যাংকিং নীতিমালা বাস্তবায়ন ও ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের শক্তিশালী ভূমিকা খেলাপি ঋণ সমস্যার একমাত্র সমাধান হতে পারে।’ ব্যাংক খাতে ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার বাড়ছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব ডেবিট কার্ড চালু করতে যাচ্ছে। আমরা খুব কাছেই চলে এসেছি নিজস্ব ডেবিট কার্ড চালু করতে।’
এ সময় এবিবির চেয়ারম্যান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও সিইও সেলিম আরএফ হোসেন, এবিবির বোর্ড অব গভর্নর এবং বিভিন্ন ব্যাংকের এমডি ও সিইওরা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের ব্যাংক খাতের ডিজিটাল রূপান্তরের যাত্রা নিয়ে আলোচনা করার লক্ষ্যে দুদিনব্যাপী এ সামিটে বাংলাদেশের ৪৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ১৫০ জনের বেশি কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন। সম্মেলন উপলক্ষে এবিবি এবং পিডব্লিউসি যৌথভাবে ‘ব্যাংকিং ইভল্যুশন: ড্রিভেন বাই ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য গৃহীত কৌশলগুলো বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন ব্যাংকের সিএক্সও পর্যায়ের নির্বাহীদের নিয়ে একটি জরিপ স্থান পেয়েছে।
সম্মেলনের লক্ষ্য বাংলাদেশে ডিজিটাল আর্থিক সেবার প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করা প্রধান গতিধারাগুলোর ওপর আলোকপাত করা। দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্যে পথ চলতে ব্যাংকগুলো যে কৌশলগুলো গ্রহণ করতে পারে তা বিশ্লেষণ করে মূল্যবান পর্যবেক্ষণ প্রদান করা। এছাড়া এর লক্ষ্য আর্থিক সেবা খাতকে প্রভাবিত করে এমন বিদ্যমান নীতি এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামো নিয়ে গবেষণা করা।
এ সম্মেলন নিয়ে এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘এবিবির ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন সামিট বাংলাদেশে ডিজিটাল আর্থিক সেবার প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা প্রধান গতিধারাগুলো সম্পর্কে মূল্যবান পর্যবেক্ষণ দেবে। এটি দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্যে পথচলার জন্য ব্যাংকগুলো যে কৌশল নিতে পারে তা বিশ্লেষণ করবে এবং আর্থিক সেবা খাতকে প্রভাবিত করে এমন বিদ্যমান নীতি এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোগুলো নিয়ে গবেষণা করবে। এছাড়া এ সম্মেলন এ খাতের স্টেকহোল্ডার, ইকোসিস্টেম এনাবেলার্স ও নীতিনির্ধারকদের এগিয়ে যাওয়ার পথে সুপারিশ করবে। একটি একীভূত লক্ষ্যের দিকে একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থিক সেবা খাত একটি টেকসই এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ইকোসিস্টেম তৈরি করতে পারে, যা সব স্টেকহোল্ডারের উপকারে আসবে।
সম্মেলনে ব্যাংকিং সেক্টরে ডিজিটাল রূপান্তরের গুরুত্ব অনুধাবনকারী স্পন্সরদের সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে।