খেলাপি ঋণের সমানতালে বাড়ছে প্রভিশন ঘাটতি বা নিরাপত্ত সঞ্চিতি। এবারও প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে দেশের ৮ ব্যাংক। চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে এসব ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ২০ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে আট ব্যাংকের সামষ্টিক প্রভিশন ঘাটতির অঙ্ক ২০ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি তিন ব্যাংক, বেসরকারি চার এবং বিশেষায়িত এক ব্যাংক। তিন মাস আগে এই ঘাটতি ছিল ১৯ হাজার ৪৮ কোটি। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে প্রভিশন ঘাটতি বেড়েছে ১ হাজার ১১১ কোটি। তবে কয়েকটি ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় বেশি প্রভিশন সংরক্ষণ করেছে। এ কারণে পুরো ব্যাংক খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা।
আলোচিত সময়ে রাষ্ট্র মালিকানাধীন তিন ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে সরকারি বেসিক ব্যাংকের। মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা। মার্চ প্রান্তিক শেষে অগ্রণী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১১ কোটি টাকা। আর রূপালী ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ৩ হাজার ৮০ কোটি টাকা।
বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি। মার্চ প্রান্তিক শেষে এ ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি ৭ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকার বেশি। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ঢাকা ব্যাংক। এ ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি ৪৯৭ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৩৬০ কোটি টাকা ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকা প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে। আর বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের (বিকেবি) প্রভিশন ঘাটতি ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
জানা গেছে,প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতিতে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়। প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হলে সে ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এটি মোট বিতরণকৃত ঋণের যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।
গত ২০২২ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে খেলাপি ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। আর সবশেষ ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৫৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা।
Related Posts
Top 10 Exporter Countries in 2024: A Global Trade Story
Discover the Top 10 Countries with the Zero-Income Tax Policy
Discover The Top 10 Debt-Free Countries and Their Secrets