ব্যবহৃত টাকার নোট পরিচ্ছন্ন ও নোটের স্থায়িত্ব ধরে রাখার জন্য নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘পরিচ্ছন্ন নোট নীতিমালা’। গত সোমবার ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচ্ছন্ন নোট নীতিমালা অনুমোদনের কথা জানানো হয়।
নীতিমালা প্রণয়নের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, প্রচলিত নোটের সৌন্দর্য ও গুণগত মানের ওপর দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২-এর ২৩ (১) ধারা মোতাবেক বাজারে পরিচ্ছন্ন নোট প্রচলন করা বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম দায়িত্ব। ওই ধারায় উল্লেখ আছে, ব্যাংক ছেঁড়া, বিকৃত বা অত্যধিক নোংরা নোট পুনরায় ইস্যু করবে না। এ উদ্দেশ্য অর্জনে বাংলাদেশ ব্যাংক সময়ে সময়ে বিভিন্ন নীতি বা পদ্ধতি প্রণয়ন করে।
ওই নীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী প্রচলনে থাকা পুরোনো, ধ্বংসযোগ্য ও অযোগ্য নোট যথাযথভাবে ধ্বংস করা হয় এবং নতুন নোটের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা হয়—এসব কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এরপরও বাজারে অপ্রচলনযোগ্য ও ত্রুটিপূর্ণ নোট হিসেবে অধিক ময়লাযুক্ত, ছেঁড়া-ফাটা, আগুনে ঝলসানো, ড্যাম্প, মরিচাযুক্ত, অধিক কালিযুক্ত, অধিক লেখালেখি ও স্বাক্ষরযুক্ত এবং বিভিন্ন খণ্ডে খণ্ডিত নোটের আধিক্য দেখা যাচ্ছে।
‘তাই প্রচলনে থাকা ব্যাংক নোটের নিরাপত্তা, গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ও নোটের সামগ্রিক অবস্থার উন্নতিতে উল্লিখিত নোট বাজার থেকে দ্রুত প্রত্যাহার ও ধ্বংস করে নতুন নোট প্রতিস্থাপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচ্ছন্ন নোট নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে,’ বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নীতিমালা অনুযায়ী, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে সৃষ্ট বা ব্যবহারের কারণে ময়লাযুক্ত, ছেঁড়া-ফাটা, আগুনে ঝলসানো, ড্যাম্প, মরিচাযুক্ত, অধিক কালিযুক্ত, অধিক লেখাযুক্ত, স্বাক্ষরযুক্ত, বিভিন্ন খণ্ডে খণ্ডিত নোট প্রত্যাহার করা হবে। এর মাধ্যমে অপ্রচলনযোগ্য মুদ্রা বদলে দেওয়ার মতো অপরিচ্ছন্ন মুদ্রাও বাজার থেকে তুলে নিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিপরীতে সমপরিমাণ নতুন মুদ্রা বাজারে সরবরাহ করা হবে।
বর্তমানে ছেঁড়া-ফাটা এবং অপ্রচলনযোগ্য নোট সরাসরি ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে বদলে দিয়ে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। যাচাই-বাছাই শেষে অচল নোট নিয়মিত ধ্বংস করা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা কাঠামোতে বর্তমানে ১ হাজার টাকা, ৫০০ টাকা, ২০০ টাকা, ১০০ টাকা, ৫০ টাকা, ২০ টাকা ও ১০ টাকা মূল্যমানের নোট রয়েছে। এই ৭ ধরনের মুদ্রাকে ‘ব্যাংক নোট’ বলা হয়। এ ছাড়া ৫ টাকা, ২ টাকা ও ১ টাকা মূল্যমানের কাগুজে নোটের পাশাপাশি ধাতব মুদ্রাও রয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে ৫০ ও ২৫ পয়সা মূল্যমানের শুধু ধাতব মুদ্রা। এই পাঁচটি মুদ্রার নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, গত মে মাস শেষে বাজারে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ বিভিন্ন মানের মুদ্রা বাজারে ছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ কোটি টাকা।
Related Posts
The World’s Top 20 Foods: A Global Culinary Journey
The World’s Top Food Items: A Culinary Journey Across Continents
Top 10 Countries Leading Global Food Production in 2024