
প্রশ্নঃ আত্মীয়-বন্ধুদের দ্বারা যখন প্রতারণার শিকার হই তখন কী করণীয়?
উত্তরঃ আত্মীয়-বন্ধুরাই করুক বা অন্য লোকে করুক, প্রতারণার ব্যাপারে আপনাকে সবসময়ই সচেতন থাকতে হবে। এমনকি ভাই, বোন বা ঘনিষ্ঠ বন্ধুর দ্বারাও আপনি প্রতারিত হতে পারেন। ঘটনাগুলো খুব দুঃখজনক কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত, কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেছে।
এক ভদ্রলোক বাহরাইনে নিজস্ব কোম্পানি চালাতেন। হঠাৎ জরুরি কারণে ১৫ দিনের জন্যে তাকে দেশে আসতে হয়। বন্ধুকে দায়িত্ব দিয়ে আসেন। কিন্তু দেশে আসার কয়েকদিন আগে মায়ের মৃত্যু এবং কয়েকদিন পর বাবার মৃত্যু, বাবার শেষ ইচ্ছা হিসেবে বিয়ে করা ইত্যাদি কারণে তার ফিরতে ফিরতে পাঁচ মাস দেরি হয়ে যায়। বাহরাইনে ফিরে গিয়ে নিজেকে তিনি একজন নিঃস্ব, কপর্দকশূন্য মানুষ হিসেবে আবিষ্কার করলেন। কারণ তার অনুপস্থিতির সুযোগে তার সেই বন্ধু এবং কাজিন মিলে কোম্পানিটা নিজেদের নামে করিয়ে নিয়েছে। কোম্পানির গাড়ি, লোকবল, ব্যাংক ব্যালেন্স-সব মিলিয়ে তার প্রায় দেড়কোটি টাকার সম্পদ হাতছাড়া হয়ে গেল শুধু সরলতার কারণে। আসলে বন্ধু বা আত্মীয় হলে মানুষ যে ভুলটা করে-অতিরিক্ত বিশ্বাস করতে গিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মনীতি অনুসরণের প্রয়োজন বোধ করে না।
আরেকজন ভদ্রলোক-তিনিও তার খুব ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে তার ব্যবসার একটা প্রজেক্টের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। প্রথম প্রথম ভালোই চলছিলো দেখে তিনি পুরো দায়িত্বই তার ওপর ছেড়ে দেন। হিসেবনিকেশ যা দিতো তা-ই ঠিক মনে করতেন। খতিয়ে দেখতেন না। এমনকি কেউ কেউ যখন তাকে সাবধান করতে চাইলো, তিনি উল্টো আরো ভুল বুঝলেন এই ভেবে যে, বন্ধুর প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে বোধহয় এরা এসব বলছে। শেষমেশ যখন বুঝলেন তখন অনেক দেরি হয়েছে। তার সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে বন্ধুটি ততদিনে বিশাল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে নিজের নামে। একই ভদ্রলোক তার ছোট ভাইকে বিশ্বাস করেও একইভাবে ঠকেছেন। তার ধারণা ছিলো, যে ভাইকে নিজে লেখাপড়া করিয়েছেন, ব্যবসা বুঝিয়েছেন-সে কি এরকম করতে পারে? কিন্তু পারে যে, তা তো সে করেই দেখালো। আর্থিক বা ব্যবসায়িক যেকোনো বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মনীতি সুস্পষ্টভাবে অনুসরণ করলে অনেক প্রতারণা থেকে আপনি রক্ষা পাবেন।