প্রশ্নঃ আপনি বিদেশ যেয়ে কাজ করাটা অনেক সময় পছন্দ করেন না। কিন্তু আমি ইতিমধ্যে কোরিয়ার লটারি পেয়েছি। আমি আমার বাবা ও ভাই মিলে দেশে ব্যবসা করি। সেখানে মাসে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা আয় হয়। কিন্তু তারা আমার আয়ের কোনো টাকাই দেয় না। আর আমি নিজের মতো করে দানও করতে পারি না। আমি যদি কোরিয়া যাই সেখানে আমার বেতন দেড় লক্ষ টাকা সর্বনিম্ন হবে। আর আমি বেতনের টাকা দিয়ে নিজের মনমতো দান করতে পারব। এখন আমার জন্যে বিদেশ যাওয়াটা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে নাকি বোকামি হবে- দয়া করে পরামর্শ দেবেন।
উত্তরঃ আসলে ওখানে উপার্জন করা দেড় লক্ষ টাকা আমাদের দেশে উপার্জিত ৪০ হাজার টাকার সমান। আর আপনার বাবা ও ভাই মিলে দেশে ব্যবসা করছেন। এখন দেড় লক্ষ টাকা আয় হচ্ছে।
আপনি ব্যবসা ছেড়ে গেলেন। স্বাভাবিকভাবে আপনাদের পারিবারিক ব্যবসাতে একটা লোকবলের সংকট সৃষ্টি হবে।
দুই নম্বর, আপনি বিদেশে গিয়ে যে টাকাটা উপার্জন করবেন সেটার ট্যাক্স আছে এবং সেখানকার খরচ আছে। আসা-যাওয়ার খরচ আছে। এবং নিশ্চয়ই এমনি এমনি হয় নি, এটার পেছনে খরচ আছে। কারণ যারা বিভিন্ন আদম পাঠায় তাদের ব্যাপার-স্যাপার রয়েছে।
সব দেয়ার পরে আপনি হয়তো দেখবেন- আসলে তেমন কিছুই আপনার হাতে নেই।
তাছাড়া আপনি কতদিন কাজ করবেন? এক বছর দুই বছর তিন বছর। কারণ আপনি যে জবে যাচ্ছেন জবটা যে খুব একটা সফিস্টিকেটেড জব না এটাতো বোঝা যাচ্ছে।
তারপরে আপনি দেশে এসে কী করবেন? আপনি না ঘরকা থাকবেন, না ঘাটকা থাকবেন। ঘরেরও না ঘাটেরও না।
তো বাবা-ভাইয়ের সাথে আছেন, আরো পরিশ্রম করেন আরো মেহনত করেন। একটা সময় আসবে যে ব্যবসা বাড়বে।
ব্যবসা যখন বাড়বে ব্যবসায় আপনি যখন অভিজ্ঞ হবেন তখন আয় বাড়বে এবং তখন ব্যয় করতে পারবেন।
আর বাইরে যারা যাচ্ছেন, তাদের নিয়ে কী বলব! আগেকার দিনের কুন্তাকিন্তেদেরকে জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। আর এখন আমরা যাই প্রলুব্ধ হয়ে।
আসলে তাদের তো এই ধরনের লোকই দরকার!
তা নইলে তারা নিত না তো। সে দেড় লক্ষ টাকা দিচ্ছে মানে আপনার কাছ থেকে যদি সে ছয় লক্ষ টাকা উপার্জন করতে না পারে সে আপনাকে দেড় লক্ষ টাকা দেবে না তো।
আপনি ওখানে গিয়ে যে পরিমাণ পরিশ্রম করবেন সে পরিশ্রম যদি এখানে করেন আপনার আয়-উপার্জন অনেক বেড়ে যাবে।
অতএব ডিসওয়াশ করার জন্যে আপনার যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নাই। যেহেতু আপনি ব্যবসা করছেন অলরেডি।
ওখানে দেড় লক্ষ টাকা লিমিট আছে। কিন্তু আপনি যদি ব্যবসার গোমড় বোঝেন। গোমড় মানে রহস্য, ফাঁক ফোকর। তো রহস্য বুঝতে পারলে আপনি দেড় কোটি টাকাও উপার্জন করতে পারেন। এখানে উপার্জনের কোনো লিমিট নাই।
কিন্তু এখন আপনি কোরিয়ায় যে কাজ করতে যাচ্ছেন সেটার সীমা আছে। এবং সেটার ঐ মাত্রার ওপরে আপনি আর কখনো উঠতে পারবেন না।
অতএব যাওয়াটা বোকামি ছাড়া কিছু নয়।
তবে যদি কোনো বড় কাজের জন্যে যান, মহৎ কাজের জন্যে যান, তাদেরকে ‘মানুষ’ বানানোর জন্যে যান, ঠিক আছে।
Related Posts
Q&A Series – Episode 292: Failure is the pillar of success!
Q&A Series – Episode 291: What exactly is visualization?
Q&A Series – Episode 290: How does visualization work?