
ছবি: সংগ্রহীত
প্রশ্নঃ সেকেন্ডারি শেয়ার ব্যবসা করতে ইসলামি শরিয়তে বাধা আছে কি না? সেকেন্ডারি শেয়ার ব্যবসায় যদি লাভবান হই, সে আয় বৈধ কি না?
উত্তরঃ এটাতো যারা ফকীহ, মুফতি তারা বলতে পারবেন। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি যে, সেকেন্ডারি শেয়ার ব্যবসা মানে স্রেফ জুয়া। জুয়া ইসলামে বৈধ, না অবৈধ তা আপনারা জানেন। জুয়া যদি বৈধ হয়, জুয়ার আয় যদি হালাল হয়, তাহলে এটাও হালাল, এটাও বৈধ। আর যদি জুয়া বৈধ না হয়, তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই।
জুয়াতে বা তিন তাসের খেলায় যে রকম আয়োজকরা জেতে, শেয়ার ব্যবসাতেও সে রকম জড়িত কিছু চক্রই লাভবান হয় আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সর্বস্বান্ত হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত কম্যুনিস্ট নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের একটি নিবন্ধ থেকেই বোঝা যায় এর ভয়াবহতা—
‘বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে এখন ইতিহাসের ভয়াবহতম বিপর্যয় চলছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নয় হাজার থেকে নেমে ইতোমধ্যে ছয় হাজারের ঘরে এসে দাঁড়িয়েছে। দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ৩০-৩২ হাজার কোটি টাকা থেকে মাত্র পাঁচ /ছয়শ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। দুই মাসে বাজার থেকে মূলধন হাওয়া হয়ে যাওয়ার পরিমাণ ৭০-৭৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।…..
‘বঙ্গবন্ধু রেসখেলা বন্ধ করেছিলেন, শেয়ার বাজার নিয়ে তবে উল্টো পথ কেন’ শীর্ষক এই নিবন্ধে তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশে সবচেয়ে বড় জুয়াখেলার ক্ষেত্র হলো শেয়ার বাজার। ক্যাসিনো মালিকরা যেমন কাঁচা জুয়াড়িদের নানা প্রলোভনে আসক্ত করে পাতা ফাঁদে টেনে এনে পয়সা কামাইয়ের ব্যবস্থা করে, শেয়ার মার্কেটের কতিপয় পাকা জোচ্চোরও একইভাবে লোভের ফাঁদ বসিয়েছে। ….. ঘোড়দৌড়ের জুয়ায় যেমন হতো, শেয়ার বাজারের জুয়ার আসরেও তেমনটিই হচ্ছে। মধ্যবিত্ত এমনকি দরিদ্র শ্রেণীর ৩২-৩৩ লাখ মানুষ এই প্রলোভনে প্রলুব্ধ হয়ে তাদের আয় সঞ্চয় সম্পদ জমিজমা সোনাদানা বিক্রি করে টাকা খাটিয়েছে শেয়ার বাজারে। আর তাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে স্বল্পসংখ্যক চালবাজ, অসৎ ও মহাধুরন্ধর বিনিয়োগকারী।’
[পাদটীকা : অতএব আপনিই ঠিক করুন, জুয়ায় জড়িয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার জন্যে শেয়ার বাজারে জড়িত হবেন কি না বা সে আয় বৈধ হবে কি না।]