প্রশ্নঃ আপনি বলেছেন যে, আবেগ হলো অস্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির একটি উপাদান। দৃষ্টিভঙ্গির স্বচ্ছতার জন্যে এ আবেগকে দূর করতে হবে। আমার প্রশ্ন হলো—আবেগ ছাড়া কি জীবনে চলা সম্ভব? আবেগহীন মানুষ কি রোবটের মতো নয়? আবেগশূন্য হয়ে গেলে তো আপন-পর কারোরই দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা-বেদনা আমাকে স্পর্শ করবে না।
উত্তরঃ আসলে আবেগ এবং মমতা—দুটো কিন্তু এক জিনিস নয়। আপনি মমতাকে আবেগের সাথে মিশিয়ে ফেলেছেন। মমতা হচ্ছে অন্যের প্রতি সুন্দর অনুভূতি। তার কল্যাণ কামনার অনুভূতির নাম হচ্ছে মমতা। তার ভালো চাওয়ার নাম হচ্ছে মমতা। মমতা সব সময় কল্যাণ করে।
কিন্তু এ মমতাটাই যদি বেশি বেড়ে যায়, তখন এটা হয়ে যায় নেতিবাচক আবেগ। যেমন সন্তানকে লালন করা, আদর করা এবং আহ্লাদ দেয়া—এ দুটোর মধ্যে কিন্তু পার্থক্য রয়েছে। আদর এবং আহ্লাদ কিন্তু এক জিনিস নয়। তাকে সঠিকভাবে লালন করার নাম আদর। আর তার অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়ার নাম হচ্ছে আহ্লাদ।
সেরকমই—মমতা এবং নেতিবাচক আবেগ—এ দুটো আলাদা জিনিস। মমতা আপনাকে মানুষ বানায় আর আবেগ আপনার হিতাহিত জ্ঞান লোপ করে। আবেগ আপনাকে মুক্তভাবে চিন্তা করতে দেয় না। আপনাকে দিয়ে পক্ষপাতিত্ব করায়।
আবেগপ্রবণ হলে আপনি মুক্ত চিন্তায় সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। আপনি ভাবতে থাকেন যে, অমুক এ কাজ করতে পারে না। সে যেহেতু আমার আপন, সে যা করছে তা-ই ঠিক। অর্থাৎ একজন ভুল করছে, অথচ ভুলটাকে আপনি দেখতে পাচ্ছেন না। কেন? আপনি তার ব্যাপারে অন্ধ। এটা হচ্ছে আবেগ। আবেগ আপনার দৃষ্টিকে সংকীর্ণ করে দেয়। আপনাকে অন্ধ করে দেয় এবং আবেগ সবসময় প্রজ্ঞার জন্যে ক্ষতিকর।
তথ্যসূত্রঃ