প্রশ্নঃ ফেসবুক, ইমো, হোয়াটস অ্যাপ, ক্ল্যাশ অব ক্ল্যান গেম আমার জীবনটাকে পুরো শেষ করে ফেলছে। আমাকে নিয়ে মা-বাবা উদ্বিগ্ন এবং এ কারণে পরিবারে অশান্তি লেগেই আছে। আমিও বুঝি এগুলো ভালো না, তারপরও দিনরাত যখনই সময় পাই ফেসবুকে না ঢুকলে বা গেম না খেললে ভালো লাগে না। গতকালও মধ্যরাত পর্যন্ত খেলেছি। আমি ওগুলোর নেশায় পড়ে গেছি। গুরুজী, মুক্তির পথ বলবেন। আপনি বলেছেন ১১টার পর মোবাইল বন্ধ রাখতে, কিন্তু পারি না। মহাবিপদে আছি।
উত্তরঃ ভিডিও গেম বা কম্পিউটার গেমের নেশা যে একটি মানসিক রোগ- এটি এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারই স্বীকৃতি। তাদের ১১ তম ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজেস বা আইসিডি-তে এটাকে তারা ‘গেমিং ডিজঅর্ডার’ নামে অভিহিত করেছেন। তারা বলছেন, এটা এমন এক ধরনের আচরণ যা জীবনের আর সবকিছুর আকর্ষণ থেকে একজনকে দূরে সরিয়ে দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজেস বা আইসিডি হলো এমন একটি গাইড যেখানে বিভিন্ন রোগের কোড, লক্ষণ এবং উপসর্গ সম্পর্কিত বিস্তারিত থাকে। চিকিৎসক এবং গবেষকরা এটির সঙ্গে মিলিয়ে রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন।
গেমিং আসক্তিকে কখন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বর্ণনা করা হবে, তার বিবরণ হিসেবে এ গাইডলাইনে বলা হয়েছে যে, ১২ মাস ধরে অস্বাভাবিক গেমিং আসক্তি বা আচরণ দেখা গেলে তা নির্ণয়ের পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে কারও ক্ষেত্রে যদি অস্বাভাবিক আচরণের মাত্রা অনেক বেশি হয়, তখন ১২ মাস নয়, তার আগেই ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
যেসব লক্ষণের কথা এতে উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে গেমিং নিয়ে নিজের ও্রপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা (বিশেষ করে কত ঘন ঘন, কতটা তীব্র এবং কত দীর্ঘ সময় ধরে গেমিং করছে সে বিষয়ে), গেমিংকেই সবচেয়ে প্রাধান্য দেয়া এবং নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও গেমিং অব্যাহত রাখা বা আরও বেশি গেমিং করা।
অবশ্য এর আগেই পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে গেমিং আসক্তিকে প্রধান জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যসহ কিছু দেশে তো ইতোমধ্যে এর চিকিৎসার জন্যে প্রাইভেট এডিকশন ক্লিনিক পর্যন্ত রয়েছে! মার্কিন শিশু-কিশোরদের অটিজম, মনোযোগ হ্রাস, হতাশা ও তীব্র বিষণ্নতায় আক্রান্ত হওয়ার সাথে ভিডিও গেম আসক্তির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।
কাজেই বুঝতেই পারছেন, আপনি আসলে ভিডিও গেম নেশার এই মানসিক অসুখেই আক্রান্ত হয়েছেন। শরীরের রোগ হলে আমরা যেমন ডাক্তারের কাছে যাই, চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হতে চাই-মানসিক রোগের ক্ষেত্রেও একই। আর এই মানসিক রোগের কার্যকরী চিকিৎসা আছে কোয়ান্টামের কাছেই। ৪০ দিন নিয়মিত ভার্চুয়াল ভাইরাসমুক্তির মেডিটেশন করুন। সাদাকায়নসহ ফাউন্ডেশনের আত্ম উন্নয়নমূলক প্রোগ্রামগুলোতে আসুন। দেখবেন ধীরে ধীরে আসক্তিমুক্তি ঘটবে আপনার!
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড
Related Posts
Q&A Series – Episode 292: Failure is the pillar of success!
Q&A Series – Episode 291: What exactly is visualization?
Q&A Series – Episode 290: How does visualization work?