প্রশ্নঃ প্রত্যয়নে চাহিদা বা আকাঙ্ক্ষার প্রচণ্ডতার অভাব থাকলে কীভাবে তা বৃদ্ধি করা যেতে পারে?
উত্তরঃ সেজন্যে অটোসাজেশন দেবেন। চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষাটা যাতে তীব্র হয়। আসলে প্রত্যয়ন কীভাবে কাজ করে তা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে।
আমেরিকার একটি মন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হচ্ছে সাইকো-সাইবারনেটিক্স। এর উদ্ভাবক ছিলেন প্রফেসর ম্যাক্সওয়েল মলজ। প্রত্যয়ন সংক্রান্ত অনেক বাস্তব অভিজ্ঞতার বিবরণ প্রফেসর মলজ দিয়েছেন তার বইয়ে। একটা উদাহরণ খুব মজার। ম্যাক্সওয়েল মলজ বলছিলেন, আমাদের সাইকো-সাইবারনেটিক্স ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের জন্যে একদিন এক যুবক এলো। সে তার দুরবস্থা ব্যাখ্যা করল। তার কোনো অর্থ নেই। সে (তার মতে) ঋণ জর্জরিত এবং বিষণ্ণতায় আক্রান্ত। যুবক অবিবাহিত। মা তার সাথে থাকে। অ্যারাইজোনার স্কটসডেলে তার একটা আর্ট শপ রয়েছে। সেখানে সে নিজের ও অন্যান্য শিল্পীদের শিল্পকর্ম বিক্রি করে। অত্যন্ত মেধাবী ভাস্কর হওয়া সত্ত্বেও নিজের সম্পর্কে তার ধারণা অত্যন্ত বাজে। ওয়ার্কশপ ও সেশনে সে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে।
অবচেতন মনে তথ্য পুনর্বিন্যাসকালে সে ছয়টি প্রত্যয়ন করে :
১. আর্ট শপ এমন দামে বিক্রি হবে যে, তাতে আমার সকল দেনা শোধ হয়ে যাবে।
২. আমি বাসা বদলাতে পারব।
৩. আমার মায়ের থাকার জন্যে নতুন বাসস্থানের ব্যবস্থা হবে।
৪. ব্যাংকে আমার ১০ হাজার ডলার জমা থাকবে।
৫. আমি আর্থিক দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাব এবং ভাস্কর্য করার পর্যাপ্ত সময় পাব।
৬. আমার ভ্রমণের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হবে।
সে নিয়মিত কল্পনায় এ সবগুলো ঘটনা ঘটে যেতে দেখতে লাগল। এভাবে কয়েক সপ্তাহ কাটার পর এক সন্ধ্যায় আমার কাছে এসে হাজির হলো। বলল, ‘আমি বোধ হয় ক্রেজি হয়ে যাচ্ছি। কারণ আমার মনে একটা সুখানুভূতি এসেছে, কিন্তু বাস্তবে আমার অবস্থার এক বিন্দু নড়চড় হয় নি।’
আমি তাকে বললাম, তুমি যা অনুভব করছ, তা হচ্ছে পরিবর্তন। আর যখন তোমার ভেতরে এই পরিবর্তন এসেছে, তখন বাস্তবেও তুমি এই পরিবর্তন উপভোগ করবে।
বাস্তবে তা-ই ঘটেছিল। তার ছয়টি প্রত্যয়নই মাত্র ছয় মাসের মধ্যে বাস্তবতায় পরিণত হয়।
আসলে প্রথম পরিবর্তনটা আসতে হবে মনে, দৃষ্টিভঙ্গিতে। যে কারণে আমরা বলি যে, দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে। মনে যখন পরিবর্তন আসবে বাস্তবতাও বদলে যাবে।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড