প্রশ্নঃ দেশে কিছু হচ্ছে না দেখে বিদেশে যেতে চাচ্ছি। এক বন্ধুর সাথে পরামর্শ করেছি। সে বলেছে, কোনোরকমে চলে যা। তারপর ওখানে গিয়ে যা করার করবি। তার পরামর্শ মতো কি কাজ করবো?
উত্তরঃ বিদেশে কাজের জন্যে যেতে চান ঠিক আছে। কিন্তু কোনোরকমে বিদেশে তো যাই আগে, তারপর দেখা যাবে-এই মনোভাব নিয়ে যারাই বাইরে গেছেন তারাই প্রতারিত হয়েছেন, সর্বস্বান্ত হয়েছেন। আমাদের একজন গ্রাজুয়েটের ঘটনা শুনুন-
‘তিন মাসের ভিসা নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই তিন মাস পর অবৈধ হয়ে গেলাম। তারপরও কাজ করে যাচ্ছিলাম। কাজটা ভালোই ছিলো। বেতনও ভালো। কিন্তু কয়েক বছর পর নিয়ম হলো যে, কোনো অবৈধ অভিবাসী দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকতে পারবে না-ধরপাকড় শুরু হলো। এসময় এক কোরিয়ানের সাথে পরিচয় হলো। সে বললো, তাকে বাংলাদেশি আট লাখ টাকার সমপরিমাণ টাকা দিলে সে আমার স্থায়ী হওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে। নিরুপায় হয়ে তা-ই করলাম। এজন্যে বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে ধারও করতে হলো। ফিরে এলাম দেশে। দেড়মাস পর এক কোরিয়ানকে পাঠিয়ে আমাকে নিয়ে গেল। কিন্তু পেলাম এক বছরের ভিসা।
এবার সে প্রতিমাসেই আমার কাছ থেকে বেতনের ভাগ চাইতো। বাধ্য হয়ে দিতে হতো তাকে। কারণ সে ভিসা করিয়ে না দিলে আমি তো বিপদে পড়বো। আমি অপেক্ষা করছিলাম, দুবছর পর স্থায়ীভাবে বসবাসের আবেদন করতে পারবো সেটার জন্যে।এক বছর যখন শেষ হলো তখন ভিসা করিয়ে দেয়ার বিনিময়ে সে আরো টাকা দাবি করলো। তা-ই দিলাম। কিন্তু এবার ছয় মাসের মাথায় ইমিগ্রেশন পুলিশ এসে আমাকে অ্যারেস্ট করে নিয়ে যায়। আমার কাগজপত্র না কি সব অবৈধ-এ কথা বলে আমাকে দেশে পাঠিয়ে দেয়। ঐ কোরিয়ান আমার জন্যে কিছুই করে নি। মাঝখান থেকে আমার ২০ লক্ষ টাকা, জীবনের অমূল্য দুটি বছর-সবই নষ্ট হলো।’
এই হলো একজনের কাহিনী। আরেক মহিলা তার ছেলেকে কাতার পাঠিয়েছিলেন দুই লক্ষ ৬০ হাজার টাকা খরচ করে। বেতন দেয়ার কথা ছিলো নাকি ৩৫ হাজার টাকা। অথচ বিদেশে যাওয়ার পর দেখলো বেতন বাংলাদেশি টাকায় মাত্র আট হাজার টাকা। আর ভিসাবাবদ টাকাও নিয়েছে ৬০ হাজারের বেশি। কাজেই বুঝতেই পারছেন বিদেশে চাকরির সুযোগ এলে ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে যাওয়াটা কত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড
Related Posts
Q&A Series – Episode 292: Failure is the pillar of success!
Q&A Series – Episode 291: What exactly is visualization?
Q&A Series – Episode 290: How does visualization work?