প্রশ্নঃ আমি ব্যবসায় বিভাগের ছাত্রী। আমার লক্ষ্য বা মনছবি কী হওয়া উচিত?
উত্তরঃ লক্ষ্য হওয়া উচিত, আমি যে সাবজেক্ট-এ যাই, যা-ই আমি পড়ি, যা-ই আমি করি, আমি যেন আমার এ জ্ঞানটাকে মানুষের সেবায় কাজে লাগাতে পারি। কারণ আপনি যদি মানুষের সেবা, জাতির সেবা, দেশের সেবায় আপনার জ্ঞানকে কাজে লাগান, আপনার কোনোকিছুর অভাব হবে না। অর্থ যেমন পাবেন, সেই সাথে পাবেন বিত্ত-খ্যাতি-প্রতিপত্তি। আমরা যদি এ পি জে আব্দুল কালামের কথা ধরি, দেখবো যে, তার জীবনের লক্ষ্য ছিলো বিজ্ঞানী হয়ে দেশের সেবায় সে জ্ঞানটাকে কাজে লাগানো। উনি বিদেশে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হতে পারতেন, বিদেশি গবেষণাগারে গিয়ে গবেষণা করতে পারতেন। কিন্তু তা তিনি চান নি, শুধু দেশের সেবা করতে চেয়েছেন। এ কারণে তার দেশ এবং জাতি তার আন্তরিক সেবার প্রতিদান দিয়েছে তাকে দেশের রাষ্ট্রপতি করে। একজন মাঝির ছেলে হয়েও ভারতের ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে থাকবেন।
কিন্তু তার সমসাময়িক তো আরো কয়েক হাজার বিজ্ঞানী ছিলেন, তাদের কথা কি ভারতের লোকজন স্মরণ করবে? করবে না, কারণ তারা হয়তো বিদেশে গিয়ে বড় লেকচারার বা গবেষক হয়েছেন, দেশকে কিছু দিতে চান নি। অতএব জীবনের লক্ষ্যটা হচ্ছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি আগে স্থির করুন যে, আপনি জীবন থেকে কী চান। আপনার লক্ষ্য যদি হয় মোটা বেতনের চাকরি-বাড়ি-গাড়ি-টাকা, তাহলে বুঝতে হবে আপনি পণ্যদাসত্বের মরীচিকার পেছনে ছুটছেন। আর উপার্জনই কিন্তু সব নয়। একজন মানুষ ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করলো, কিন্তু মাসে তার খরচ হয়ে গেল ৬০ হাজার টাকা, ব্যালেন্স কী হলো? মাইনাস ১০ হাজার টাকা।
যেমন, এক এমবিএ-র কথা বলি। মাসে বেতন পায় ৪০ হাজার টাকা। কিন্তু তার নিজের চোখের চিকিৎসার জন্যে ৬০ হাজার টাকা লাগবে। সে টাকা তাকে নিতে হচ্ছে তার মায়ের কাছ থেকে। তিন বছর চাকরি করার পরেও যদি তার এ অবস্থা হয়, তার মানে কী? আর একজন মানুষ যদি ১০ হাজার টাকা উপার্জন করে এক হাজার টাকা জমাতে পারে তাহলে কী হলো? প্লাস ওয়ান থাউজেন্ড, সে কিন্তু ঋণী নয়, সে সঞ্চয়ী। অতএব জীবন আসলে অনেক বড় এবং এটা একটাই। সেজন্যে আপনাকে এক জীবনেই প্রথম হতে হবে। মেধার বিকাশ ঘটাতে হবে। আবার আপনি একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নিজের মেধাকে সেবায় পরিণত করতে পারেন। সে অনুযায়ী মনছবি দেখুন।