প্রশ্নঃ অভ্যাসকে কি পরিবর্তন করা যায়? আমি ধূমপান ছাড়তে চাচ্ছি। কীভাবে ছাড়ব?
উত্তরঃ অভ্যাসকে পরিবর্তন করা যায়। যে-কোনো অভ্যাস বদলানো যায়। অনেকে বলেন, ধূমপান ছাড়তে পারব না। ধূমপান ছাড়লেই তো হয়ে যায়।
১৯৭৫ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রা ধূমপানের ওপর একটা সংখ্যা করেছিল। তার প্রচ্ছদে আদর্শ ধূমপায়ী হিসেবে আমার ছবি ব্যবহার করেছিল। তখন আমার গোঁফ-চুল আরো বড় ছিল। গোঁফ-চুল আর ধোঁয়া ছাড়া কিছু দেখা যাচ্ছে না। আমি চুরুট ছাড়া কথা বলতে পারতাম না, লিখতে পারতাম না। চুরুট না খেলে খেতেও পারতাম না।
যেদিন মনে হয়েছে, সাথে সাথে ফেলে দিয়েছি, ‘দূর ফালতু, কত টাকা নষ্ট করেছি এর পেছনে!’ এবং ফেলে দিয়েছি মানে ফেলেই দিয়েছি। তারপর আর কেউ আমাকে কোনোদিন চুরুটসহ দেখে নি।
কিন্তু মজার ব্যাপার হলো যেদিন ছেড়ে দিলাম তার পরদিনই একজন আমার জন্যে চুরুট নিয়ে এলো। একেবারে খাঁটি হাভানা চুরুট। একেকটা অরিজিনাল কেস-এর মধ্যে একেকটা চুরুট। অনেক দামী তাতে সন্দেহ নেই।
আসলে আমার পরিচিতজনরা জানত যে, আমি চরুট খুব পছন্দ করি। আর আমি তখন এস্ট্রোলজি করি। তারা হয়তো মনে করত যে আমার মুড ভালো থাকলে প্রেডিকশন ভালো হবে। তাই এই গিফট। চুরুটের বক্সটা দেখে আমিও খানিকক্ষণ নির্বাক হয়ে গেলাম। এই চুরুটের নাম আমি শুনেছি। কিন্তু কখনো খেয়ে দেখার সুযোগ হয় নি। কিন্তু আজ এমন এক সময়ে সেটা আমার হাতে এসেছে যখন আমি নিজেই নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করে ধূমপান ছেড়েছি।
সে বলল যে, দোস্ত তোমার জন্যে নিয়ে এলাম। – দোস্ত, আমি তো ছেড়ে দিয়েছি। – ছেড়ে দিয়েছ? তাতে কী, একটা খাও! – দোস্ত তুমি এখন দোস্ত না। তুমি এখন খুচরা শয়তান। কারণ ছাড়া এবং ধরার মধ্যে তফাত হচ্ছে একটা সিগারেট।
সে তো খুব ক্ষেপে গেল। ‘আমি খুচরা শয়তান আর তুমি এখন ফেরেশতা! – না, না। ঐ অর্থে না। খুচরা শয়তানের গল্প শোনো। আমি মাত্র কালকে ছেড়েছি। তুমি তো একদিন আগে আসতে পারতে। এখন তুমি আমাকে এসে ইনসিস্ট করা মানে হচ্ছে তুমি আমার দোস্ত না, ইউ আর রিপ্রেজেন্টিং খুচরা শয়তান। এরপর আর ধরি নি কোনোদিন। ফিনিশ মানে ফিনিশ।
যে-কোনো কিছু পরিবর্তন করা যায়। এটা হচ্ছে মানবীয়। অভ্যাস যার দাস সে হচ্ছে মানুষ। আর আমরা এখানে সবাই মানুষ। অনন্য মানুষ হতে চাচ্ছি । অতএব অভ্যাসের ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। আর এটা খুব কঠিন কাজ না।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড