প্রশ্নঃ আমি টিভিতে সংবাদ পাঠক হিসেবে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আশানুরূপ পোস্টটি পাই নি। বিভিন্ন খবরে ভয়েস দিচ্ছি। এ অবস্থায় আমি কী করতে পারি? আমি হতে চাই নিউজ প্রেজেন্টার, বানিয়েছে নিউজ কাস্টার। আমার করণীয় জানাবেন।
উত্তরঃ নিজেকে ভাগ্যবান মনে করুন যে, অন্তত শুরু করার একটি জায়গা পেয়েছেন। দেখা যাবে যে, এই কাস্টিং করতে করতেই প্রেজেন্টার হয়ে যাবেন। একজন কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট দাঁড়ানোর জায়গা পেলে বসার জায়গা করে নেবে, বসার জায়গা পেলে সে নাশতা-পানির ব্যবস্থা করে নেবে। তারপরে খাওয়ার ব্যবস্থা করবে এবং শোওয়ার জায়গা করে নেবে। এটাই একজন কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েটের স্পিরিট হওয়া উচিত। আর আপনি এটা অনায়াসে পারবেন। শুধু কাজটাকে ভালবাসবেন। কাজকে ছোট মনে করবেন না। যত মনোযোগ দিয়ে, যত ভালবেসে আপনি কাজ করবেন সেই কাজ আপনাকে তত সম্মান দেবে, তত খ্যাতি দেবে, তত অর্থ দেবে। যদি ঝাড়ুও দেন, সেটা ভালোভাবে দেবেন। সেই কাজ আপনাকে সম্মানিত করবে। আর যদি মনের ভেতরে ক্ষোভ নিয়ে, অসন্তোষ নিয়ে কাজ করেন, আপনি এগুতে পারবেন না। আপনার হতাশা দূর হবে না।
ছোট্ট ঘটনা বলি- আমি তখন এস্ট্রলজার। আমার এক ক্লায়েন্ট আসতেন লুঙ্গি পরে একটা শার্ট গায়ে। লুঙ্গিটাও ভালো না। শার্টের ভেতরে গেঞ্জিতে ছিদ্র ছিদ্র মানে এয়ার কন্ডিশনড। আমার কাছে যিনিই আসেন তিনিই তো আমার ক্লায়েন্ট। আমি বসতে বললেও তিনি খুব সংকোচ করতেন এবং দাঁড়িয়েই থাকতেন। চেহারাসুরত এরকম যে, অন্য যেকোনো অফিসে গেলে তাকে টুলেও বসতে দেয়ার কথা না। তিনি ভুসির ব্যবসা করতেন। একবার ইমামগঞ্জে তার গদিতে যাবার সুযোগ হলো। দেখি একটা চৌকির ওপরে পাটি বিছানো। তার ওপর ক্যাশবাক্স। তিনি বসে আছেন সেখানে। আমাকে দেখেই একেবারে লাফ দিয়ে উঠলেন। তার ধারণা ছিলো না যে, আমি কখনো যাবো। এর মধ্যে দেখি তার কাছে এক লোক এসে বললো যে, ২০ লাখ টাকা লাগবে। এই ভুসির ব্যবসায়ী তাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, ২০ লাখ টাকা সে কিসে নেবে-৫০ টাকার নোটে, ১০০ টাকার নোটে না ৫০০ টাকার নোটে? এটা ৩০ বছর আগের কথা। আমি বিস্মিত হয়ে গেলাম যে, এই মানুষটা নগদ ২০ লাখ টাকা ৫০ টাকার নোটে দিতে পারে, ১০০ টাকার নোটে দিতে পারে, ৫০০ টাকার নোটেও দিতে পারে।
অর্থাৎ কী পরিমাণ নগদ অর্থ তার রয়েছে! সব উপার্জনই তার ভুসির ব্যবসা থেকে। কারণ সে এই ভুসি খুব ভালবাসতো। অতএব যে কাজ আপনি করবেন সে কাজকে ভালবাসতে হবে। তাহলে কাজ আপনাকে প্রতিদান দেবে। অধিকাংশ মানুষের চাকরি জীবনে এত হতাশা কেন? কারণ সে মনে করে, যে কাজটা সে করছে এটা কোনো কাজই না। আরেকজন যেটা করছে সেটা কাজ। কাজের প্রতি তার মমতা থাকে না, ভালবাসা থাকে না। ফলে অগ্রগতিও হয় না।
অতএব আপনি যা করছেন সে কাজটাকে ভালবাসবেন। আপনাকে কেউ আটকাতে পারবে না। যেমন, এই নিউজ কাস্টার হিসেবে কাজ করাটা আপনার জন্যে আনন্দের হতো যদি আপনি এই দৃষ্টিভঙ্গি লালন করতেন এবং সেটাই খুলে দিতো আপনার প্রেজেন্টার হবার স্বর্ণদ্বার।
Related Posts
Q&A Series – Episode 292: Failure is the pillar of success!
Q&A Series – Episode 291: What exactly is visualization?
Q&A Series – Episode 290: How does visualization work?