Business Care News

Business News That Matters

woman, meditation, relax

প্রশ্নোত্তর সিরিজ – ৫৪ঃ মনছবি যৌক্তিক ও বাস্তবভিত্তিক হতে হবে। এর মানে কী?

প্রশ্নঃ মনছবি যৌক্তিক ও বাস্তবভিত্তিক হতে হবে। এর মানে কী?


উত্তরঃ আসলে বাস্তবভিত্তিক মনছবি হচ্ছে এমন মনছবি যা অর্জন করা সম্ভব বলে আপনি বিশ্বাস করতে পারেন। অন্য কেউ বিশ্বাস করুক বা না করুক, আপাতদৃষ্টিতে মনছবির বাস্তবায়ন যতই দুঃসাধ্য মনে হোক—কিছু যায় আসে না। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আপনি একে সম্ভব বলে বিশ্বাস করেন কি না।

ধরুন, আপনি যদি এখন চিন্তা করেন যে, ষাঁড়ের কী সুন্দর বাঁকানো শিং! ঠিক আছে—আমি মনছবি দেখি, আমার মাথায় দুটো শিং গজিয়েছে। এটা আপনার মস্তিষ্ক গ্রহণ করবে না। যদি খুব বেশি মনোযোগ দেন সেখানে দুটো টিউমার হতে পারে। কিন্তু শিং হবে না কারণ আপনার ডিএনএ-র প্রোগ্রামে শিং নেই। এটা হচ্ছে অবাস্তব।

কিংবা ধরুন, আপনি একজন পুলিশ অফিসার। যৌথ অভিযানে গিয়ে দেখলেন যে, পুলিশ অফিসারের চেয়ে আর্মি অফিসারের গুরুত্ব বেশি। আপনি ভাবলেন, মেডিটেশন যখন শিখেছি মনছবি করে চীফ অব আর্মি স্টাফ হবো। এটা আপনার মস্তিষ্ক গ্রহণ করবে না। কারণ আপনি ঐ প্রক্রিয়ায় নেই। কিন্তু আপনি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ হবার মনছবি করতে পারেন, কারণ আপনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছেন।

অথবা ধরুন, আপনি খুব সফল ব্যবসায়ী। ৪০ বছর বয়স হয়ে গেছে, কিন্তু আপনার এক ফাইল সচিবের ওখানে গিয়ে আটকে গেল। আপনি বুঝলেন যে, আপনার অনেক টাকা থাকতে পারে কিন্তু সচিবের কলম খুব শক্তিশালী। ভাবলেন—সচিব হবো। ব্যবসা বাদ দিয়ে মনছবি করলেন সচিব হওয়ার। এটাও আপনার মস্তিষ্ক গ্রহণ করবে না।

আবার ২০ লাখ টাকা ঋণ হয়ে গেছে, ২০ কোটি টাকার মনছবি করছেন। এটা বাস্তব। ২০ লাখ টাকা ঋণ হচ্ছে আপনার বর্তমান, ২০ কোটি টাকার মনছবি হচ্ছে ভবিষ্যৎ। এখানে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের কোনো দ্বন্দ্ব নেই। যেমন, আপনি ১০০ কোটি টাকার মালিক হওয়ার মনছবি করতে পারেন। এটা অবশ্যই যৌক্তিক। কারণ আজকে বাংলাদেশে ১০০ কোটি টাকার মালিক এমন অনেকে আছেন যারা খুব সাধারণ অবস্থা থেকে, হয়তো ১০০ টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। অতএব ১০০ কোটি টাকা অর্জন কোনো অবাস্তব কিছু নয়। অর্থাৎ আপনার মনছবি যত বড় হোক তাতে কোনো অসুবিধা নেই, কিন্তু তা যেন অবাস্তব বা অযৌক্তিক না হয়। আপনি নিজে যেন তা সম্ভব বলে বিশ্বাস করতে পারেন।

তবে এর সাথে সময় এবং সুযোগের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। একবার এক দম্পতি গেলেন ভারত ভ্রমণে। আগ্রায় ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে স্ত্রী আগ্রা ফোর্ট-এ ‘দরবারে আম’—যেখানে ময়ূর সিংহাসন ছিল, এখন যেখানে শুধু শ্বেতপাথরের বেদী, সেখানে বসে পড়লেন। দেখে তার স্বামী বললেন, দেখ, তোমার ভাগ্য খুব ভালো। তুমি ৩০০ বছর পর জন্মগ্রহণ করেছো। ৩০০ বছর আগে যদি এই বেদীতে বসতে চাইতে তাহলে হয় তোমার দেহ থেকে মাথা আলাদা হয়ে যেত অথবা বহু মানুষের দেহ থেকে মাথা আলাদা করে তারপর তোমাকে এখানে এসে বসতে হতো। অর্থাৎ সময়েরও একটা ব্যাপার থাকে। আমাদের কাছে আজকে যে সুযোগ রয়েছে ১০০ বছর আগে জন্মগ্রহণ করলে এই সুযোগ আমাদের সামনে থাকত না। আপনাকে সময় দেখতে হবে, সুযোগ দেখতে হবে, পারিপার্শ্বিক পরিমন্ডলটা দেখতে হবে—তারপর লক্ষ্য স্থির করতে হবে।

সুত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড

Skip to content