প্রশ্নোত্তর সিরিজ – পর্ব ১১৮: বাবার সাথে আমার অনেক গ্যাপ

প্রশ্নঃ বাবা-মার প্রতি যে ক্ষোভ ছিল সেগুলো মেডিটেশনের মাধ্যমে দূর করতে পেরেছি। এই ক্ষোভগুলো ছিল পাওয়া না-পাওয়া নিয়ে। কিন্তু এখন নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বাবা আমার মাকে মাঝেমধ্যে মারে। কখনো ভালো ব্যবহার করে না, সুন্দর আচরণ করে না, সবসময় রেগে কথা বলে। অন্যদিকে মা-ও ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে না। বাবার সাথে আমার অনেক গ্যাপ। তাই বোঝাবার সাহস পাই না। কীভাবে এই সমস্যার মোকাবেলা করব?

উত্তরঃ অনেক পরিবারের ছেলেমেয়েদের সমস্যা এটি। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে মা-বাবারা ছেলেমেয়েদের সামনে নিজেদেরকে আদর্শ হিসেবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। অনেক বাবা-মা শুধু বাবা-মা হয়েছেন কিন্তু মানুষ হন নি। অতএব আপনার মা-বাবাকে সরাসরি বলতে যাওয়া অর্থহীন। ওদের দুজনকেই মেডিটেশনে কমান্ড সেন্টারে এনে বোঝান, যেন তাদের পরস্পরের প্রতি মমতা এবং দায়িত্ববোধ বাড়ে।

আর এ ঘটনায় নিজে উত্তেজিত হয়ে বা কষ্ট পেয়ে কোনো লাভ নেই। কারণ এটি আপনার আয়ত্তের বাইরে। অনেক ছেলেমেয়ে তার বাবা-মার পরস্পরের প্রতি এই দুর্ব্যবহার দ্বারা ইমোশনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মা-বাবার মধ্যকার ঝগড়া দ্বারা আবেগীয়ভাবে প্রভাবিত হলে আপনার পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত হবে।

আপনার দৃষ্টিভঙ্গি হবে—মা-বাবার মধ্যে সম্পর্ক যা-ই থাকুক, জীবনে সফল ও প্রতিষ্ঠিত হওয়ার যে লক্ষ্য আপনার সামনে, তা যেন কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়। কারণ যদি জীবনে সফল হন, খুব ভালো অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন, একদিন আপনার মা-বাবাই আপনার কথা শুনবে। তখন আপনি তাদেরকে প্রভাবিত করার মতো যোগ্যতা অর্জন করবেন। এটা বাস্তবতা। এমন উদাহরণ একটি দুটি নয়, অসংখ্য। কিন্তু বাবা-মার আজকের আচরণ যদি আপনার সাফল্যের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করে, তাহলে আপনি কিছুই করতে পারবেন না। অতএব বাবা-মা যা করছে করুক, আপনাকে জীবনে প্রথম হতে হবে, আপনার নিজের অবস্থান শক্ত করতে হবে—এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই কাজ করতে থাকুন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, ভবিষ্যতে অন্যভাবেও আপনি এর প্রতিকার করতে পারেন। বড় হয়ে নিজের বিবাহিত জীবনে স্ত্রীর সাথে আপনার বাবার মতো আচরণ করবেন না। কারণ আপনার বাবা আপনার মাকে প্রহারের জন্যে আপনার যে কষ্ট হয়েছে, আপনি যদি আপনার স্ত্রীর সাথে এমন দুর্ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার ছেলেমেয়ের মনেও একই রকম কষ্ট হবে।

তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড