প্রশ্নঃ আমি হলে থাকি। ছোটবেলা থেকেই আমি চুপচাপ ধরনের। বহু বিচিত্র মানুষের সাথে মিশতে পেরেছি এখানে। আমাদের রুমের আপুরা পরচর্চা আর অন্যের সমালোচনায় সবসময় মুখর থাকেন। তাদের রুচি, কথাবার্তা আমার ভালো লাগে না। আমি তাদের আলোচনায় কখনোই অংশগ্রহণ করি না, ফলে রুমের অন্যদের থেকে আমি মানসিকভাবে বিচ্ছিন্ন। আমি তাদের থেকে অনুপ্রেরণার কিছু পাই না। আমি তাদের সাথে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কথা বলি না। আমি জানি, এর জন্যে তারা আমার পেছনে কথা বলে। কিন্তু আমার মনে হয়, আমি আমার অবস্থানে ঠিক। আমার কী করা উচিত?
উত্তরঃ আপনি আসলেই খুব ভাগ্যবান। আপনার ভেতরের ভালো মানুষটি এখনো খুব সুন্দর অবস্থায় আছে, ভালো অবস্থায় আছে। এখন যাদের চিন্তা-চেতনার সাথে মিল হয়, যাদেরকে মনে করেন যে, এরাও আমার মতো ভালো থাকতে চায়, তাদের সাথে মিশতে হবে। আপনি যেহেতু কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েট-ফাউন্ডেশনের কোয়ান্টিয়ার, গ্রাজুয়েট এদের সাথে মিশবেন। সাধারণ মানুষ ভালো কাউকে দেখলে প্রথমে তাকে অবহেলা করে, খারাপ ব্যবহার করে। কিন্তু তারপরও যখন দেখে যে, সবার প্রতি তার আচরণ একইরকম তখন ধীরে ধীরে তাকে পছন্দ করতে শুরু করে। তাকে শ্রদ্ধা করে, নিজেদের আশ্রয়স্থল বানাতে চেষ্টা করে। অতএব এই ভালোত্বটাকে আরো বাড়াতে হবে। আপনি যে ভালো আছেন, এই ভালো থাকাটাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
একটা সময় আসবে, যারা এখন আপনার পেছনে কথা বলে, তারা আপনাকে সম্মান করতে শুরু করবে। আপনি নিয়মিত মেডিটেশন করবেন। শুক্রবার সাদাকায়ন অথবা মঙ্গলবার আলোকায়নে আসবেন এবং আপনার রুমমেটদেরও আস্তে আস্তে মেডিটেশনের পথে নিয়ে আসুন। আসলে একজন মানুষ অন্যের কথা বেশি বলে যখন সে নিজের দোষগুলোকে চাপা দিয়ে রাখতে চায়। অন্যের অক্ষমতা, অন্যের দোষ সে বার বার বলে এক ধরনের তৃপ্তি পায়। নিজের মনকে এই প্রবোধ দিতে চায় যে, এ দোষগুলো অন্যের, অন্যরা খারাপ, সে আসলে খারাপ নয়। যখন আপনি আরো ভালো হবেন এবং ওদেরকে ভালোর পথে আনার চেষ্টা করবেন, তারাও যখন আত্মনিমগ্ন হবে তখন তারা প্রশান্তি পাবে এবং আপনার দলেরই একজন হয়ে যাবে।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড