প্রশ্নঃ আমার পাঁচ বছরের ছেলেটি খুবই দুরন্ত। সবকিছু নিয়েই সে জেদ করে। বলা যায়, সারাক্ষণ তাকে নিয়ে আমি তটস্থ থাকি—কখন কী চেয়ে বসে, না দিতে পারলে খেপে যাবে, অন্যের সামনে হেনস্থা করবে ইত্যাদি। তাকে কীভাবে সামলানো যায়?
উত্তরঃ বাচ্চারা অনেক সময় চাওয়ার জন্যেই চায়। সে-ও জানে সব চাওয়াই পাওয়ার নয়। কিন্তু আপনি যদি তার সব চাওয়াই পূরণ করে দেন, তখনই সে আহ্লাদ পায় এবং বখে যায়। কারণ খুব সহজে পাওয়া যায় বলে সে জেদ করতেই অভ্যস্ত হয়ে যায়। মনোবিজ্ঞানের একটা নিয়ম হলো, কিছু কিছু আচরণের মাত্রা যেমন মনোযোগ দিলে বাড়ে, তেমনি কোনো ব্যবহার বা আচরণ যদি ক্রমাগত উপেক্ষা করা হয়, তাহলে সেসব আচরণও কমে যাবে।
অর্থাৎ সন্তানের যেসব আচরণে মা-বাবা মনোযোগ দেবেন, সেসব আচরণ সে বার বার করবে। যেমন, বাচ্চা কোনোকিছু কেনার জন্যে জেদ করার ফলে তাকে সেটা কিনে দিলে তার জেদ করার প্রবণতা আরো বাড়বে। তেমনি কেউ যদি কোলে ওঠার জন্যে মাটিতে গড়াগড়ি দেয় আর তার জেদের ফলে তাকে কোলে তুলে নেয়া হয়, তাহলে তার এই অনাকাক্সিক্ষত আচরণটি মনোযোগ পাবে। ফলে এ আচরণটি পরে আরো বাড়বে।
আর শিশু বয়সই এই আচরণ বা বদভ্যাসগুলো শোধরানোর সময়। কাজেই সে যত বিদ্রোহী হয়ে উঠুক না কেন, সন্তানের মঙ্গলার্থে দৃঢ় হতে ভয় পাবেন না। আপনার দৃঢ়তা মূলত তার মধ্যে নিরাপত্তাবোধই সৃষ্টি করবে।
তবে অন্যদের সামনে সন্তানকে বকবেন না বা তার ভুল ধরিয়ে দেবেন না। অর্থাৎ সন্তান জেদ করলে তাকে বকা দেয়া, বোঝানো, দাবি পূরণ করা বা তাকে কটাক্ষ করা ইত্যাদি থেকে নিজেকে বিরত রাখুন এবং তার জেদকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করুন। ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে যে-কোনো জেদের ক্ষেত্রে এমন আচরণ করতে পারলে আপনার সন্তান বুঝতে পারবে, জেদ করে কোনোকিছু আদায় করা যায় না।
আর তার যোগ্যতা নিয়ে কোনো নেতিবাচক কথা তাকে বলবেন না। কখনো বলবেন না যে, তার দ্বারা কিছু হবে না। এতে করে তার আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাবে এবং সে ভুল বা বোকামি করতে শুরু করবে, যে বোকামির মাশুল আসলে আপনাকেই দিতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড
Related Posts
Q&A Series – Episode 292: Failure is the pillar of success!
Q&A Series – Episode 291: What exactly is visualization?
Q&A Series – Episode 290: How does visualization work?