
প্রশ্নঃ আমাকে যারা কষ্ট দিয়েছে তাদের ওপরে আমার অনেক রাগ। তাদের সাথে কী রকম ব্যবহার করা যায়?
উত্তরঃ যারা কষ্ট দিয়েছে তাদের প্রতি এই রাগ-ক্ষোভ বা প্রতিশোধস্পৃহা তাদের যতটা না ক্ষতি করছে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করছে আপনার। মানসিক শুধু নয়, শারীরিকও। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের রাগ-ক্ষোভ বেশি তাদের হার্ট এটাক হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের চেয়ে বেশি। আরেকটি গবেষণায় অন্যদের প্রতি বিদ্বেষ বা প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাব যারা পোষণ করেন তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে এটি সিগারেট, মাদক, কোলেস্টেরল বা অতিরিক্ত ওজনের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া রাগ স্টমাক এবং পরিপাকতন্ত্রের জন্যেও ক্ষতিকর এবং ক্রমান্বয়ে তা আলসারের রূপ নিতে পারে। এমনকি বদমেজাজী এবং রাগ-ক্ষোভপ্রবণ মানুষদের ক্ষেত্রে পরবর্তী জীবনে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার যোগসূত্রও খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আর এই রাগ-ক্ষোভের সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে প্রজ্ঞার ওপর অর্থাৎ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ওপর। অর্থাৎ আপনার রাগ-ক্ষোভ যদি বেশি থাকে, প্রতিহিংসা যদি বেশি থাকে, তাহলে আপনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।
ধরুন, একটা টিনের ঘর। তাতে একটা ছিদ্র আছে। ছিদ্র দিয়ে বাইরের আলো আসছে। ছিদ্র থেকে আপনি যত দূরে থাকবেন, বাইরের আলো তত কম পাবেন। কিন্তু আপনি যদি ঐ ছিদ্রটার সাথে চোখ লাগাতে পারেন, তাহলে বাইরের পৃথিবীটাকে অনেক বেশি দেখতে পাবেন।
রাগ এবং ক্ষোভ কী করে? ঐ যে ছিদ্র দিয়ে আলো ঢুকছে, যে ছিদ্র দিয়ে আপনি বাইরের পৃথিবীকে দেখতে পারতেন, রাগ এবং ক্ষোভ এ ছিদ্র থেকে আপনাকে দূরে সরিয়ে দেয়। আর যখন আপনি প্রশান্ত হন, আত্মনিমগ্ন হন তখন ঐ ছিদ্রের কাছে যেতে থাকেন।
তথ্যসূত্রঃ প্রশ্নোত্তর | কোয়ান্টাম মেথড